সেলিম ওসমান ও আইভীকে গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম দিল টিপু
Published: 5th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনকে সেলিম ওসমান ও আইভীকে গ্ৰেপ্তারের ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মহানগর বিএনপি'র সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, খুনি সেলিম ওসমান ও মেয়র আইভী গ্রেফতার না হওয়ায় তারা গোপন বৈঠক করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জকে অস্থিশীল করার জন্য।
সুতরাং সেলিম ওসমান ও আইভীকে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। আর যদি তাদেরকে গ্ৰেপ্তার করা হয় তাহলে সমস্ত দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে।
দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি'র বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্যেকালে তিনি এই আল্টিমেটাম দেন।
বুধবার ( ৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের ১১নং ওয়ার্ডের এমন সার্কেসের এসিআই'র সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি এম সার্কেস থেকে শুরু করে হাজীগঞ্জ মোড় হয়ে সরদার পাড়া রোড় দিয়ে ১২নং ওয়ার্ডের খানপুর রেললাইন বৌবাজার হয়ে ডনচেম্বার দিয়ে মিশপাড়া এসে শেষ হয়।
তিনি বলেন, গত ৫ই আগস্ট সাঈদ, মুগ্ধ ও স্বজনের রক্তের বিনিময়ে এদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে গিয়ে আবারো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করার জন্য তার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, যুবলীগ শ্রমিক লীগদের দিয়ে তারা এক মাস ব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছে।
আর তারেক রহমানের সৈনিকেরা বেঁচে থাকতে নারায়ণগঞ্জে কোন ছাত্রলীগ যুবলীগ শ্রমিকলীগকে রাজপথে দাঁড়াতে দিব না।
তিনি আরও বলেন, মহানগর বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি থানা ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে বিএনপির নেতাকর্মীরা আপনারা প্রস্তুত থাকবেন যেখানে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগদেরকে যেখানেই পাবেন তাদেরকে প্রতিহত করে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হবে।
আমাদের কর্মসূচি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। আওয়ামী লীগের ও অগণতান্ত্রিক কর্মসূচি ও নৈরাজ্যকে প্রতিহত করতে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন নেতাকর্রামীরা রাজপথে আছে এবং থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ল ম ওসম ন ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স ল ম ওসম ন ও ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স সদস য স র সদস য য বল গ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।