নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনকে সেলিম ওসমান ও আইভীকে গ্ৰেপ্তারের ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মহানগর বিএনপি'র সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, খুনি সেলিম ওসমান ও মেয়র আইভী গ্রেফতার না হওয়ায় তারা গোপন বৈঠক করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জকে অস্থিশীল করার জন্য।

সুতরাং সেলিম ওসমান ও আইভীকে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। আর যদি তাদেরকে গ্ৰেপ্তার করা হয় তাহলে সমস্ত দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে। 

দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি'র বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্যেকালে তিনি এই আল্টিমেটাম দেন।

বুধবার ( ৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের ১১নং ওয়ার্ডের এমন সার্কেসের এসিআই'র সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি এম সার্কেস থেকে শুরু করে হাজীগঞ্জ মোড় হয়ে সরদার পাড়া রোড় দিয়ে ১২নং ওয়ার্ডের খানপুর রেললাইন বৌবাজার হয়ে ডনচেম্বার দিয়ে মিশপাড়া এসে শেষ হয়।  

তিনি বলেন, গত ৫ই আগস্ট সাঈদ, মুগ্ধ ও স্বজনের রক্তের বিনিময়ে এদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে গিয়ে আবারো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করার জন্য তার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, যুবলীগ শ্রমিক লীগদের দিয়ে তারা এক মাস ব্যাপী কর্মসূচি দিয়েছে।

আর তারেক রহমানের সৈনিকেরা বেঁচে থাকতে নারায়ণগঞ্জে কোন ছাত্রলীগ যুবলীগ শ্রমিকলীগকে রাজপথে দাঁড়াতে দিব না। 

তিনি আরও বলেন, মহানগর বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি থানা ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে বিএনপির নেতাকর্মীরা আপনারা প্রস্তুত থাকবেন যেখানে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগদেরকে যেখানেই পাবেন তাদেরকে প্রতিহত করে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হবে।

আমাদের কর্মসূচি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। আওয়ামী লীগের ও অগণতান্ত্রিক কর্মসূচি ও নৈরাজ্যকে প্রতিহত করতে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন নেতাকর্রামীরা রাজপথে আছে এবং থাকবে। 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.

আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মিঠু, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন রিপন, ১২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাবু, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে এলাহী সোহাগ, সদস্য সাইফুল ইসলাম আপন, ফয়েজ উল্লাহ সজল, হাবিবুর রহমান মাসুদ, মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন, বিএনপি নেতা কাজী নাঈম, আল আরিফ, মনির হোসেন, গোগনগর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাসেল, মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মামুনসহ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ল ম ওসম ন ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স ল ম ওসম ন ও ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স সদস য স র সদস য য বল গ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ