Prothomalo:
2025-06-15@22:58:52 GMT

যৌক্তিক সমাধানে আসাটা জরুরি

Published: 6th, February 2025 GMT

চাকরিতে কোটা সংস্কারে শুরু হওয়া আন্দোলন দেশে অভূতপূর্ব একটি অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সেই আন্দোলন শুরু করেছিলেন। দুঃখজনক হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতেই এখনো অযৌক্তিক কোটাপদ্ধতি থেকে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে বিতর্ক আগেও ছিল, এখন আরও বেশি জোরালো হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি আশাব্যঞ্জক।

ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আলাদা কোটা সংরক্ষিত আছে, যেটি পোষ্য কোটা নামে পরিচিত। আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা শিক্ষক–কর্মকর্তাদের সন্তানেরা কেন এই কোটাসুবিধা ভোগ করবেন, তা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। কারণ, কোটা হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। তবে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মতো একেবারে নিম্নশ্রেণির কর্মচারীদের জন্য সেটি ভেবে দেখা যেতে পারে। কারণ, সেসব পরিবার শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে থাকে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম পরিচ্ছন্নতাকর্মীই থেকে যায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাদ দেওয়া হলেও সেই সব নিম্নশ্রেণির কর্মচারীর কথা বিবেচনা করে তাঁদের জন্য সামান্য কোটা রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদের মুখে সেই কোটাও বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এবার শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখোমুখি অবস্থানের মুখে পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক যে সুবিধা রয়েছে, সেটা বিবেচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠনের কথাও উল্লেখ করা হয় সিদ্ধান্তে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনে বসার পর সোমবার এ ঘোষণা দেন উপাচার্য। ওই ঘোষণায় অনির্ধারিতসংখ্যক পোষ্য কোটার পরিবর্তে ৪০টি কোটার কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া একজন ব্যক্তি একবারের জন্য এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ওই অনশন ভাঙেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং পরদিন তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেখানে কর্মকর্তা–কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে পুরো পোষ্য কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণার পর আনন্দ প্রকাশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁরা এখন সন্দেহ প্রকাশ করছেন।

যা–ই হোক, আমরা আশা করব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে বসে এবং সবার সম্মতি নিয়ে একটি যৌক্তিক সমাধানে আসবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা মনে করি, পোষ্য কোটা নিয়ে প্রশ্নের সুরাহা হওয়া উচিত। বৈষম্যমূলক কোনো কোটাব্যবস্থা থাকতে পারে না। যুক্তিতর্ক ও আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।

গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।

বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’
  • বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
  • সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন