চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ কামিন্স-হ্যাজলউডের, অজিদের অধিনায়ক কে
Published: 6th, February 2025 GMT
পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তার আগে বড় দুঃসংবাদ পেল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। ইনজুরির কারণে ৫০ ওভারের এই টুর্নামেন্টে খেলা হবে না ভারতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক ও পেসার প্যাট কামিন্সের।
তার সঙ্গে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন পেসার জর্জ হ্যাজলউড। আছে আরও দুই দুঃসংবাদ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ঠিক আছে মার্কোস স্টইনিস তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। ইনজুরির কারণে আগেই টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মিশেল মার্শ।
কামিন্স ও হ্যাজলউডের বিষয়ে সিএ’র প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি বলেন, ‘দূভাগ্যবশত, কামিন্স, হ্যাজলউড ও মার্শের ইনজুরি আছে এবং তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে খেলার মতো ফিট হতে পারবে না। এটা দুশ্চিন্তার, তবে অন্যদের জন্য দরজা খুলে যাচ্ছে।’
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাদের জায়গা পূরণের মতো ক্রিকেটার নিশ্চয় খুঁজে নেবে। রেকর্ড ৬টি ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে ওই গভীরতা আছে। প্রশ্ন হচ্ছে- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অধিনায়কের দায়িত্ব কার কাঁধে দেবে অস্ট্রেলিয়া? অজি কোচ ম্যাকডোনাল্ড অবশ্য স্টিভ স্মিথ ও ট্রাভিস হেডের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়ার কথা ভাবছেন।
কোচ ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘আমরা যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এই দলটা নিয়ে কথা বলছিলাম তখন স্মিথ ও হেডের সঙ্গে কথা হয়েছিল। আমরা তাদের দু’জনকে নেতৃত্বের জন্য ভাবছি। তাদের দু’জনের থেকেই একজন দায়িত্বটা পাবে। স্মিথ নেতৃত্বে ফিরে টেস্টে খুব ভালো করেছে। ওয়ানডে নিয়েও অনেক কাজ করেছে। তাদের দু’জনের একজনই হবে অধিনায়ক।’
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ ‘বি’তে রয়েছে। ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান আছে তাদের গ্রুপে। ২২ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অজিরা টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ খেলবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।