Samakal:
2025-12-13@19:09:00 GMT

উপনিবেশবিরোধী আন্দোলন

Published: 6th, February 2025 GMT

উপনিবেশবিরোধী আন্দোলন

স্বাধীন বাংলাদেশে আজ নতুন করে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী সূর্য সেনকে নিয়ে নাট্য নির্মাণ কেন? শুধুই কি ইতিহাসের কাহিনি উপস্থাপন? না। বাংলাদেশের স্বনামধন্য নাট্যদল ঢাকা পদাতিকের আগে তাদের নাট্য প্রযোজনায় যে প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে তাতে তা মনে হয় না। ঢাকা পদাতিক তাদের ৩৮তম এ প্রযোজনায় বিপ্লবী নায়ক সূর্য সেনকে নতুন প্রজন্মের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। চরিত্র ইতিহাস বিপ্লবের মন্থনে অনাগত জাতিসত্তাকে নতুন করে মুক্তির পথ নির্দেশ করে। সূর্যসেন ইতিহাসের পুনরুত্থানে একটি প্রতীক। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন বিশিষ্ট নাট্যজন মাসুম আজিজ। 

অভিনেতা নির্দেশক মাসুম আজিজ ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর আকস্মিকভাবে মারা গেলে নাটকটির নির্দেশনার দায়িত্ব পালন করেন দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য ও বিশিষ্ট অভিনেতা নাদের চৌধুরী। ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি নাটকটির উদ্বোধন প্রদর্শনীর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল ‘নাট্যযাত্রা’। নাটকটিতে উপজীব্য করা হয়েছে ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী সূর্য সেনের প্রহসনমূলক বিচারকে। যে বিচারের ফলে সূর্য সেনকে ফাঁসির নামে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সূর্য সেন ১৯১৬ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের ছাত্রকালীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। 

তারপর চট্টগ্রামে এসে বিপ্লবী দল গঠন করেন। তারকেশ্বর দস্তিদার, কল্পনা দত্ত, প্রীতিলতা প্রমুখ মিলে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেন। ১৯৩০ সালের দিকে সূর্য সেনের নির্দেশে প্রীতিলতা ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করতে ৫৩ জন ইংরেজ হতাহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সূর্য সেন মোস্ট ওয়ান্টেডে পড়েন। ১৯৩৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সূর্য সেন আগ্নেয়াস্ত্রসহ ধরা পড়েন। অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামলার আসামি দেখিয়ে ১২১/১২১-এর ধারা অনুযায়ী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ২ জুন থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বিচারের নামে প্রহসন চলে। ব্রিটিশরা সূর্য সেনের ওপর বর্বরোচিত অত্যাচার করে। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে দাঁত ভেঙে ফেলে এবং শরীরের হাড় ভেঙে দেয়। হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে পেটাতে পেটাতে তাঁকে অজ্ঞান করে ফেলে। পরে অর্ধমৃতদেহ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়ে ফাঁসি কার্যকরের ঘোষণা করে। যুগে যুগে বিপ্লবী সূর্য সেন জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রেরণা হয়ে উঠেছে। নাটকটি প্রসেনিয়াম মঞ্চে উপস্থাপিত। 

গত ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে নাটকের একটি প্রদর্শনী হয়েছে। দর্শকরা বেশ উপভোগ করেছে প্রদর্শনীটি। অভিনয়শিল্পীরা যে যার জায়গা থেকে সেরাটি দিয়েছেন। নাটকটিতে চল্লিশের অধিক চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে। এর মধ্যে সূর্য সেন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাদের চৌধুরী। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন– মাহবুবা হক কুমকুম, মিল্টন আহমেদ, হাসনাহেনা শিল্পী, মাহাবুবুর রহমান, সাবিহা জামান, শ্যামল হাসান, কাজী আমিনুর, আক্তার হোসেন প্রমুখ। 

নবনির্দেশনার অনুভূতি জানিয়ে নাদের চৌধুরী বলেন, “ট্রায়াল অব সূর্য সেন’ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন নিয়ে ঐতিহাসিক একটি নাটক। এর রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রয়াত মাসুম আজিজ ভাই। পরবর্তী সময়ে এ নাটকের কিছু কিছু জায়গায় প্রয়োজনসাপেক্ষে অলংকরণ করে নবনির্দেশনার কাজটি আমি করেছি। ঐতিহাসিক এ নাটক আমাদের এখনকার জেনারেশনের দেখা উচিত।” 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ