বিস্কুট, কেক, জুস, ড্রিংকস প্রভৃতি পণ্যের ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) কমানোর জন্য কয়েক দিন ধরে দাবি করে আসছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকও হয়েছে তাঁদের। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি কোনো বৈঠক।

আজ বৃহস্পতিবার এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমি মনে করি, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। আমরা আশাহত, মর্মাহত, দুঃখিত। তবু বারবার যৌক্তিক দাবি নিয়ে এনবিআরকে বলে যাব।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠকটি হয়। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবির বিষয়ে বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান ব্যবসায়ীরা। এ কারণে তাঁরা আশাহত বলে জানান।

৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর অধ্যাদেশ জারি হয়। তাতে মেশিনে উৎপাদিত বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, টমেটো সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংকসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, বাড়তি শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা হলে পণ্যের দাম বাড়বে। তিনি হতাশার সঙ্গে বলেন, ‘মুনাফা থাকলে ব্যবসা করব। মুনাফা না থাকলে অন্য ব্যবসার দিকে ধাবিত হব। আমরা ভোক্তার ওপর দাম বাড়াতে চাই না। বাংলাদেশে যত কম দামে বিস্কুট বিক্রি হয়, এত কম দামে আর কোথাও বিস্কুট বিক্রি হয় না।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠক হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

সি-স্যুট সম্মাননা পেলেন দেশের ২৪ জন করপোরেট ব্যক্তিত্ব

দেশের করপোরেট জগতের ২৪ জন ব্যক্তি পেয়েছেন বাংলাদেশ সি-স্যুট অ্যাওয়ার্ডস বা পুরস্কার। গত শনিবার ঢাকার ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। চতুর্থবারের মতো এই পুরস্কার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২০২৫ সালের সেরা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন সিটি ব্যাংকের এমডি ও সিইও মাসরুর আরেফিন। বর্ষসেরা প্রধান ব্যবসা কর্মকর্তা বা ব্যবসায় পরিচালক শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন প্রাণ–আরএফএল গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম মইনুল ইসলাম এবং নেস্‌লে বাংলাদেশের পরিচালক এ এস এম হাফিজুল ইসলাম।

বর্ষসেরা প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন গ্রামীণফোনের সিএমও ফারাহ নাজ জামান এবং মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের কাজী মো. মহিউদ্দিন। বর্ষসেরা প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিও) শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন ওয়ালটন হাই–টেক ইন্ডাস্ট্রিজের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ আলম। বছরে ১০০–৪৯৯ কোটি আয় করা প্রতিষ্ঠানের বর্ষসেরা এমডি বা সিইও শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন আইপিডিসি ফাইন্যান্সের এমডি রিজওয়ান দাউদ শামস।

বর্ষসেরা প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা (সিএইচআরএ) শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন ট্রান্সকম গ্রুপের করপোরেট হেড অব এইচআর ও পরিচালক এম সাব্বির আলী এবং আকিজবশির গ্রুপের পরিচালক দিলরুবা শারমীন খান। বর্ষসেরা করপোরেটবিষয়ক কর্মকর্তা (সিসিএও) শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন গ্রামীণফোনের সিসিএও তানভীর মোহাম্মদ। বছরে ১০০ কোটি টাকার কম আয় করা প্রতিষ্ঠানের বর্ষসেরা সিইও শ্রেণিতে সম্মাননা পেয়েছেন ওয়ালটন মাইক্রো–টেক করপোরেশনের সিইও নিশাত তাসনিম শুচি। এ ছাড়া বর্ষসেরা প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) শ্রেণিতে ট্রান্সকমের হেড অব টেকনোলজি আরিফ উজ জামান এবং বর্ষসেরা প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) শ্রেণিতে আকিজবশির গ্রুপের ক্লাস্টার ৩ এর সিইও মো. মফিজুল হোসেন আইরাজ সম্মাননা পেয়েছেন।

ইলেকট্রনিক খাতের বর্ষসেরা সিইও শ্রেণিতে ইলেক্ট্রো মার্টের সিইও মো. নূরুল আফসার, তৈরি পোশাক খাতের বর্ষসেরা সিইও বা এমডি শ্রেণিতে উর্মি গ্রুপের এমডি আসিফ আশরাফ এবং এফএমসিজি খাতের বর্ষসেরা সিইও শ্রেণিতে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক তাহমিনা মোস্তফা সম্মাননা পেয়েছেন। বর্ষসেরা প্রধান আর্থিক (সিএফও) বা অর্থ পরিচালক শ্রেণিতে প্রাণ–আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী এবং বিকাশের সিএফও মঈনুদ্দিন মোহাম্মদ রাহগীর, বর্ষসেরা প্রধান সরবরাহ ব্যবস্থা কর্মকর্তা (সিএসসিও) বা সরবরাহ ব্যবস্থা পরিচালক প্রাণ–আরএফএল গ্রুপের সিএসসিও মো. তানজীর হেলাল এবং রেকিটের সরবরাহ ব্যবস্থা পরিচালক মোহাম্মদ জিয়া উদ্দীনও সম্মাননা পেয়েছেন।

এ ছাড়া বর্ষসেরা ট্রানজিশনাল সি–স্যুট শ্রেণিতে কীরনের সিইও মো. তাজদীন হাসান, বর্ষসেরা উদ্যোক্তা এসিআইয়ের এমডি আরিফ দৌলা এবং বর্ষসেরা টেকসই উদ্ভাবনে অগ্রদূত সম্মাননা পেয়েছেন টিম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত আবদুল্লাহ হিল রাকিব এবং বর্ষসেরা ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টিকারী নেতৃত্বের সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি), ইউনাইটেড গ্রুপ ও টুয়েলভ ক্লথিংয়ের সহযোগিতায় এই ফ্ল্যাগশিপ আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম। এ বছর সম্মাননাটির জন্য ৫১টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০২টি মনোনয়ন জমা পড়ে। বাছাই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করেছে একটি বিশেষায়িত কাউন্সিল বোর্ড।

বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন এমন নেতৃত্ব, যা ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বে বৃহত্তর দায়িত্বকে অনুধাবন করে কাজ করবে এবং সততা ধরে রেখে প্রতিষ্ঠান ও দেশের উন্নয়নে দিকনির্দেশনা দিতে পারবে। সি-স্যুট অ্যাওয়ার্ড শুধু সম্মাননা নয়, এটি করপোরেট নেতৃত্বের মানোন্নয়নের জন্য একটি প্রয়োজনীয় আহ্বান।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সি-স্যুট সম্মাননা পেলেন দেশের ২৪ জন করপোরেট ব্যক্তিত্ব
  • যুক্তরাষ্ট্রে খেলনা রপ্তানি করছে আরএফএল