‘আমরা আশাহত, মর্মাহত, দুঃখিত’, এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকের পর আহসান খান চৌধুরী
Published: 6th, February 2025 GMT
বিস্কুট, কেক, জুস, ড্রিংকস প্রভৃতি পণ্যের ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) কমানোর জন্য কয়েক দিন ধরে দাবি করে আসছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকও হয়েছে তাঁদের। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি কোনো বৈঠক।
আজ বৃহস্পতিবার এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমি মনে করি, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। আমরা আশাহত, মর্মাহত, দুঃখিত। তবু বারবার যৌক্তিক দাবি নিয়ে এনবিআরকে বলে যাব।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠকটি হয়। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের বাড়তি শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবির বিষয়ে বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান ব্যবসায়ীরা। এ কারণে তাঁরা আশাহত বলে জানান।
৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর অধ্যাদেশ জারি হয়। তাতে মেশিনে উৎপাদিত বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, টমেটো সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংকসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, বাড়তি শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা হলে পণ্যের দাম বাড়বে। তিনি হতাশার সঙ্গে বলেন, ‘মুনাফা থাকলে ব্যবসা করব। মুনাফা না থাকলে অন্য ব্যবসার দিকে ধাবিত হব। আমরা ভোক্তার ওপর দাম বাড়াতে চাই না। বাংলাদেশে যত কম দামে বিস্কুট বিক্রি হয়, এত কম দামে আর কোথাও বিস্কুট বিক্রি হয় না।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও বিস্কুট প্রস্তুতকারকদের বৈঠক হয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গম্ভীরকে আবেগপ্রবণ খেলোয়াড় হিসেবে চিনি, আবেগপ্রবণ কোচ দলের জন্য ভালো হয় না
গৌতম গম্ভীরের কোচিং–পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা যেন থামছেই না। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সম্প্রতি ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই হওয়ার পর ভারত কোচের ওপর চাপ ভীষণ বেড়েছে। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও তিন ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল ভারত। দুটি সিরিজই ভারত খেলেছে ঘরের মাঠে, দুটিই কোচ গৌতম গম্ভীরের অধীন।
অথচ একটা সময় ঘরের মাঠে টেস্টে অজেয় ছিল ভারত। ২০১৩ থেকে ২০২৪ সাল—এই সময়টাতে ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট সিরিজ হারেনি তারা। সেই অপরাজেয় পথচলা থেমেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হেরে।
সেই সিরিজের পরই টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের কৌশল এবং পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সম্প্রতি সেটি আরও জোরালো হয়েছে। বিশেষ করে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ খেলোয়াড়দের বাদ দিয়ে অলরাউন্ডারদের প্রতি গম্ভীরের অতিরিক্ত ঝোঁক যে বুমেরাং হয়ে এসেছে, তা এখন বেশ স্পষ্ট। এ নিয়ে ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররাই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। এবার সেই পালে হাওয়া দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্সও।
তবে কিংবদন্তি এই দক্ষিণ আফ্রিকান সরাসরি গম্ভীরের কৌশল নিয়ে সমালোচনা করেননি। বরং সাবেক ভারতীয় ওপেনারের ব্যক্তিত্ব ও মেজাজ ড্রেসিংরুমে কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, ডি ভিলিয়ার্স কথা বলেছেন তা নিয়ে।
টেম্বার ক্ষেত্রে আসলে ওই প্রবাদটাই বলতে হয়—ডোন্ট জাজ আ বুক বাই ইটস কাভার।এবি ডি ভিলিয়ার্সসাবেক ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ইউটিউব চ্যানেলে অতিথি হয়ে কথা বলতে গিয়ে ডি ভিলিয়ার্স বলেছেন, ‘ভারতের হয়ে কথা বলাটা কঠিন। নেতৃত্বে গম্ভীর আসলে কেমন, সেটা আমি জানি না। তবে আমি তাঁকে সব সময় আবেগপ্রবণ খেলোয়াড় হিসেবে দেখেছি। সে ড্রেসিংরুমে যদি এমনই থাকে, আবেগপ্রবণ কোচ সাধারণত দলের জন্য ভালো হয় না। তবে এটাও ধরে নেওয়া ঠিক হবে না যে সে (গম্ভীর) ঠিক সেই ধরনের কোচই। পর্দার আড়ালে সে কীভাবে নেতৃত্ব দেয়, সেটি আমরা জানি না।’
আরও পড়ুনফুটবল ম্যাচে মারামারির ঘটনায় ১৭ লাল কার্ড৩ ঘণ্টা আগেতবে ডি ভিলিয়ার্স এটাও বলেছেন, ড্রেসিংরুমে সফল হওয়ার জন্য কোনো সর্বজনীন কোনো ফর্মুলা নেই। বিভিন্ন ধরনের নেতৃত্বকে খেলোয়াড়রা বিভিন্নভাবে গ্রহণ করেন। ডি ভিলিয়ার্সের কথা, ‘এখানে ঠিক-ভুল বলে কিছু নেই। কিছু ক্রিকেটার সাবেক খেলোয়াড়কে কোচ হিসেবে পেলে স্বস্তিতে থাকেন। আবার কেউ কেউ এমন কোচের সঙ্গেই বেশি স্বচ্ছন্দ, যিনি কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি, কিন্তু বছরের পর বছর কোচিং করে অভিজ্ঞ হয়েছেন।’
আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে, টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা ও অশ্বিনের বিদায়ের পর ভারত যেন একটু দিশাহীন হয়ে পড়েছে। তরুণ খেলোয়াড়েরা চাপ নিতে পারছেন না। তবে ঘরের মাঠে এমন ভরাডুবির পরও ভারতের খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু দেখছেন না এবি, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ হেরে ভারত কষ্ট পাচ্ছে, তবে এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু হয়নি। ভারতীয় দলে অনেক প্রতিভা। বিভিন্ন কম্বিনেশন দেখার মতো বিকল্প আছে, ওদের নিয়েই সামনে এগিয়ে যাওয়া যাবে।’
অধিনায়ক হিসেবে কখনো টেস্ট হারেননি বাভুমা