দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ আরএফএল এবার যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ রপ্তানি শুরু করেছে। সম্প্রতি রংপুরের গঙ্গাচড়ায় অবস্থিত আরএফএলের নিজস্ব কারখানা থেকে ব্যাগের প্রথম চালান যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে পাঠানো হয়। ব্যাগগুলো এই কারখানায় উৎপাদিত হয়েছে।

বর্তমানে কানাডা, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, জার্মানি, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ মোট ১০টি দেশে নিয়মিত ব্যাগ রপ্তানি করছে প্রতিষ্ঠানটি। আরএফএলের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

এ বিষয়ে আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আর এন পাল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সফলভাবে প্রবেশ করতে পারা আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও গর্বের। আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রে এই ব্যাগ রপ্তানি কার্যক্রমের মাধ্যমে আরএফএল বৈশ্বিক বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে।’

আর এন পাল আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যে ব্যাগ রপ্তানি করা হয়েছে, সেগুলো রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আরএফএলের কারখানায় উৎপাদিত। আমরা বরাবরই বিশ্বাস করি, শিল্পায়ন শুধু শহরকেন্দ্রিক হলে চলবে না। গঙ্গাচড়ায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে চেয়েছি, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও বিশ্ববাজারের জন্য মানসম্মত পণ্য তৈরি করা সম্ভব। এবার আমরা যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের হ্যান্ডব্যাগ রপ্তানি করেছি। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ভবিষ্যতে আরও নতুন বাজারে প্রবেশের পাশাপাশি মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখাই আমাদের লক্ষ্য।’

আরএফএল গ্রুপ জানায়, ২০২৩ সাল থেকে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ব্যাগ উৎপাদন ও বিপণন করছে তারা। বর্তমানে ট্রাভেলো ব্র্যান্ডের নামে লেডিস ব্যাগ, ব্যাকপ্যাক, ডাফল ব্যাগ, স্টোরেজ ব্যাগ, সফট লাগেজ, হার্ড লাগেজসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

দূতাবাসের কমার্শিয়াল উইংগুলো নিয়ে আলাদা সংস্থা প্রয়োজন: ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান

বিদেশে বিভিন্ন বাংলাদেশি দূতাবাসে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কমার্শিয়াল উইংগুলোকে একীভূত করে একটি স্বতন্ত্র ট্রেড প্রমোশন এজেন্সি বা বাণিজ্য উন্নয়ন সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করেছেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ।

হাসান আরিফ বলেন, ‘আমাদের দেশের বাইরে বিভিন্ন দূতাবাসে কমার্শিয়াল উইং আছে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় এই কমার্শিয়াল উইংগুলো কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে, তা নিয়ে একজন সাবেক কমার্শিয়াল কাউন্সিলর হিসেবে আমার নিজেরই সন্দেহ আছে। এ কারণে অন্যান্য দেশের মতো করে এসব কমার্শিয়াল উইংসহ ইপিবিকে একটি আলাদা ট্রেড প্রমোশন এজেন্সি করা সময়ের দাবি হয়ে গেছে।’

আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন মোহাম্মদ হাসান আরিফ। গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনে সহায়তা করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য নাহিয়ান রহমান, বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুপালি চৌধুরী, রেনাটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ এস কায়সার কবির, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়েমা হক বিদিশা, চামড়া পণ্য, জুতা উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির (এলএফএমইএবি) সহসভাপতি মো. নাসির খান, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহজাহান চৌধুরী ও বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামিম আহমেদ।

ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, একজন কমার্শিয়াল কাউন্সিলর চার বছর (দূতাবাসে) কাজ করে কাজ শেখেন। এরপর দেশে ফিরে উপসচিব হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। অর্থাৎ আমাদের কমার্শিয়াল উইংগুলোতে কোনো রকম কার্যকর উন্নয়ন হচ্ছে না। ফলাফলও তাই খুবই দুর্বল।

জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো), কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সি (কোট্রা) বা মালয়েশিয়া এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের (ম্যাট্রেড) মতো বাংলাদেশেও একটি স্বতন্ত্র ট্রেড প্রমোশন এজেন্সি করার সময় হয়েছে বলে জানান মোহাম্মদ হাসান আরিফ। তিনি বলেন, এই সংস্থা ইপিবি ও কমার্শিয়াল উইংগুলোকে সমন্বয় করে এবং বিদেশে অবস্থান করে শুধু বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রমোশনের কাজ করবে। বেসরকারি খাতকে কীভাবে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা যায়, সেটিও গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে।

রপ্তানিবিরোধী মনোভাব দূর করতে হবে

নতুন বাজার খুঁজে বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ। তিনি বলেন, পণ্য বৈচিত্র্যকরণের পাশাপাশি নতুন বাজার শনাক্ত করা এবং পণ্যের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে রপ্তানি বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজার অনুসন্ধানে সরকার, ইপিবি এবং উদ্যোক্তাদের যৌথভাবে এগোতে হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সফর করতে হবে। যে অঞ্চলগুলোতে এখনো আমরা খুব বেশি প্রবেশ করতে পারিনি, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, আসিয়ান বা দক্ষিণ আমেরিকার মতো দেশগুলোতে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

তৈরি পোশাক পণ্য নিয়েও নতুন করে ভাবার পরামর্শ দেন ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানি কি শুধু যুক্তরাষ্ট্র বা ইইউর ওপর নির্ভর থাকবে, নাকি নতুন বাজার খুঁজবে, সেটি ভাবতে হবে। হাই ভ্যালু প্রোডাক্ট ও ম্যানমেড ফাইবারের দিকে রূপান্তরের মাধ্যমেও তৈরি পোশাক খাতে বৈচিত্র্য আনতে হবে।

হাসান আরিফ বলেন, একজন ভোক্তা হিসেবে আমি চাইব দেশে ভালো মানের পণ্য কম দামে পাওয়া যাক। এর জন্য অর্থনীতিতে বিদ্যমান অ্যান্টি-এক্সপোর্ট বায়াস (রপ্তানিবিরোধী মনোভাব) দূর করা জরুরি। উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পণ্য তৈরি করতে হবে। তাতে একদিকে রপ্তানি বাড়বে, অন্যদিকে দেশীয় ভোক্তাও উপকার পাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দূতাবাসের কমার্শিয়াল উইংগুলো নিয়ে আলাদা সংস্থা প্রয়োজন: ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান
  • রপ্তানি বাড়ানো ছাড়া কোনো গতি নেই: আহসান খান চৌধুরী