বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার পর যে কীর্তি গড়ল জিম্বাবুয়ে
Published: 6th, February 2025 GMT
ক্রিকেটে কীর্তি কত ধরনের হয়! কিছু কীর্তি আছে, মাঠে নামলেই হয়ে যায়। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার তেমনই এক কীর্তিতে আজ ভাগ বসিয়েছে জিম্বাবুয়ে। এত দিন শুধু বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাই সব টেস্ট দলকে ঘরের মাঠে আতিথেয়তা দিয়েছে। আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট আয়োজন করে সেই কীর্তি ছুঁয়েছে জিম্বাবুয়েও।
২০০০ সালে বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর দেড় যুগ ক্রিকেটের দীর্ঘ সংস্করণে মোট দল ছিল ১০টি। ২০১৮ সালে নতুন করে যুক্ত হয় আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তান।
গত ৭ বছরে আফগানিস্তান দল টেস্ট খেলেছে ৬টি দলের বিপক্ষে, আজকের আগপর্যন্ত আয়ারল্যান্ড দল ৫টির বিপক্ষে। অপর দিকে ১৯৯২ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়া জিম্বাবুয়ে ঘরের মাঠে দশম প্রতিপক্ষ হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেছে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। আজ শুরু বুলাওয়ে টেস্ট দিয়ে আয়ারল্যান্ডকে আতিথেয়তা দিল তারা।
নিজের অভিষেক টেস্টেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন জোনাথন ক্যাম্পবেল, যা এই শতাব্দীতে দ্বিতীয় ঘটনা।নিজেদের মাটিতে সব টেস্ট দলকে আতিথেয়তা দেওয়ার প্রথম কীর্তিটি গড়ে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের এপ্রিলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আইরিশদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সব দলকে নিয়ে ঘরের মাঠে টেস্ট আয়োজনের চক্র পূরণ করে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা চক্র পূরণ করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানকে দিয়ে। তার আগে আয়ারল্যান্ডকে আতিথেয়তা দিয়েছিল ২০২৩ সালে।
বুলাওয়েতেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১ ম্যাচের সিরিজই খেলছে আয়ারল্যান্ড। যে টেস্টে টসে জিতে ব্যাটিং করে প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ড তুলেছে ২৬০ রান। জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি নিয়েছেন ৭ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ১ উইকেটে ৭২ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে।
ব্লেসিং মুজারাবানি নিয়েছেন ৭ উইকেট.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)