হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ধানমন্ডিসহ সারা দেশে
Published: 6th, February 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, শেখ হাসিনার উসকানিমূলক ও বিদ্বেষপরায়ণ বক্তব্য জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ধানমন্ডিসহ সারা দেশে। শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক ও অস্থিতিশীলতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ জানানোর দাবি জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের পাঠানো বিবৃতিতে এ কথাগুলো বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ও ওয়ারেন্টভুক্ত খুনি হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের সব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দ্রুত বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের মাটিতে বসে শেখ হাসিনা যে বিদ্বেষমূলক ও অস্থিতিশীলতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হোক। সরকারকে এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বিদেশের মাটিতে বসে কেউ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে না পারে।
বাংলাদেশের জনগণের ন্যায়বিচারের অধিকার রক্ষায় ভারত সরকারের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা ছাত্র ও সাধারণ জনগণের প্রতি শান্ত ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই। খুনি হাসিনা ও তার দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা মনে করে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি জনমনে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, তার সমাধান কেবল দ্রুত ও সুষ্ঠু ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই সম্ভব।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যেকোনো অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে জনগণের ক্ষোভ প্রশমিত হবে এবং দেশ স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা ইশরাকের
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।
আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন।
ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।
এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।