গাজীপুরে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর সোহাগ হোসেন (২৫) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস নিয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে মহানগরীর কোনাবাড়ী মেট্রোপলিটন থানার বাইমাইল এলাকার বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেশীদের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী মৌ আক্তারকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন সোহাগ। 

নিহত সোহাগ হোসেন সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ উপজেলার ধাপ তেঁতুলিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। তাঁর স্ত্রী মৌ আক্তার বৃষ্টি (২০) একই জেলার সান্দুরিয়া গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে। এ দম্পতি বাইমাইল মধ্যপাড়া কাদের মার্কেট এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

মৌ আক্তার বৃষ্টির চাচা রতন মিয়ার ভাষ্য, দুই বছর আগে সোহাগের সঙ্গে মৌয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাঁর ভাতিজি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর স্বামী সোহাগ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ব্র্যাকের কোনাবাড়ী শাখার অ্যাকাউন্টস অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চলতি মাসের ১ তারিখে তারা বাইমাইলের ভাড়া বাসায় ওঠেন। তারা কেন এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা স্বজন বুঝতে পারছেন না। 

বাড়ির মালিকের ছেলে দেওয়ান মোহাম্মদ রাসেল বলেন, সকাল থেকে সোহাগ-মৌ দম্পতির ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। অন্য ভাড়াটিয়ারা অনেকবার ডাকাডাকি করলেও দরজা খোলেননি। বিকেলে আবারও দরজার সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেন তারা। এ সময় দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখে ৯৯৯-এ কল দেওয়া হয়। পুলিশ বিকেল ৪টার দিকে এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এ সময় মেঝেতে মৌয়ের গলাকাটা লাশ দেখতে পাওয়া যায়। গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল তাঁর স্বামী সোহাগের মরদেহ।

কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, ৯৯৯-এ খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেন। ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ