এই দেশ বদলানো যাবে এবং সে বিশ্বাস রাখতে হবে। এ জন্য ভালো সরকার ও শাসক প্রয়োজন। আর সরকার ও শাসক তখনই ভালো হবে, যখন রাজনৈতিক দলগুলো ভালো হবে। কিন্তু সেই দলই যদি ২ নম্বর হয়, তাহলে আর তা হবে না। তাই সবার আগে রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রয়োজন। আর এটা দলগুলোকে নিজেদেরই করতে হবে।

আজ রোববার জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংস্কার থেকে নির্বাচন কত দূর’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথা বলেন।

মান্না বলেন, রাষ্ট্রকে বাসযোগ্য করতে হলে পরিবর্তন লাগবেই। তিনি বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য সম্ভব। এরপর ৪-৫ মাস পর নির্বাচন করা যেতে পারে। তবে নির্বাচনের আগে পুলিশকে বদলাতে হবে বলেও তিনি মনে করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, ‘বিভিন্ন পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের প্রস্তাবগুলোই যে ভালো হবে, তা তো কেউ বলতে পারে না। আমার জন্য সংস্কার হবে, আমি একটি কাপড় বানাব, আমি পরব; কিন্তু তা যদি দরজি নিজের মনমতো বানায়, তা কি আমার হবে? আমার তো মাপ নিতে হবে। মাপ ছাড়া বানালে গায়ে না–ও লাগতে পারে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, রাজনীতি করবেন রাজনীতিবিদেরা, রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন রাজনীতিবিদেরা। মাঝেমধ্যে দুটি পক্ষ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয় যে রাজনৈতিক দলগুলো বোধ হয় সংস্কার চায় না। কিন্তু ফ্যাসিবাদ ক্ষমতায় থাকতেই বিএনপি ৩১ দফা দেয়।

আবদুস সালাম আরও বলেন, বিএনপি ১৬ বছর ধরে আন্দোলন করে এসেছে। কিন্তু শেষের ৭ দিনে এসে আন্দোলন করে সবকিছু হয়ে গেল—এই চিন্তা করলে সব শেষ। স্বাধীনতাযুদ্ধে আওয়ামী লীগ ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করেছে। যুদ্ধের পর তারা সবকিছুকে আওয়ামীকরণের চেষ্টা করেছে।

আলোচনায় আরও অংশ নেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাহিদুল খান সাহেল, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, অধ্যাপক সুকুমার বড়ুয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য জসিমউদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ