যাঁরা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। সেখানেই প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা দিয়েছেন।

পরে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, যাঁরা যাঁরা ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত, যাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাঁদের খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তাঁরা যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকেন। যে করেই হোক, তাঁদের আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি জোর দিয়েছেন।

প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানিয়েছেন, এস আলমের যত সম্পদ আছে, সব জব্দ করা হয়েছে। মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদের বিরুদ্ধেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব সম্পদ দেশের বাইরে চলে গেছে, সেগুলো ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কথার প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব বলেন, ১২ অলিগার্ক বা যাঁরা ব্যাংক লুটপাটের সঙ্গে জড়িত বা বিদেশে টাকা নিয়ে গেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে গভর্নরকে বলেছেন বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব। ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কাজ করছেন বলে গভর্নর জানিয়েছেন।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনের কয়েকটি তথ্য তুলে ধরা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সভায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, খুব ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূল সূচকগুলোতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ৫ মাসে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ, আমদানির প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। নতুন চাকরি তৈরি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি একসময় ১২ শতাংশের মতো উঠেছিল, এখন সেটি ৯ শতাংশে, মানে ‘সিঙ্গেল ডিজিটে’ নেমে এসেছে। কাজ করার কারণে মূল্যস্ফীতি কমে আসছে। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস, জুলাইয়ের মধ্যে এটি সাড়ে ৭ শতাংশের মধ্যে আসবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আরো ৩ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস

ইসরায়েলের কাছে আরো তিন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গতকাল রবিবার রাতে মরদেহগুলো রেডক্রসের হাতে তুলে দেয় তারা।

আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। 

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা

পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, “রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েল তিন মৃত জিম্মির কফিন গ্রহণ করেছে। যেগুলো গাজায় থাকা প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেতের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তে মরদেহগুলো শনাক্ত কেন্দ্রে পাঠানো হবে।”

যদি এই জিম্মির পরিচয় শনাক্ত হয় তাহলে যুদ্ধবিরতির পর হামাসের হস্তান্তর করা মরদেহের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছাবে। গত মাসে যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় তখন তাদের কাছে ২৮ জিম্মির মরদেহ ছিল।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে মরদেহগুলো ফেরত দিতে দেরি করছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, মরদেহগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় এগুলো উদ্ধার করতে তাদের সময় লাগছে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড জানায়, রবিবার সকালে দক্ষিণ গাজার একটি সুড়ঙ্গ থেকে তারা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে।

পরে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে বলা হয়,  “সব জিম্মিদের পরিবারকে সেই অনুযায়ী আপডেট করা হয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে আমাদের হৃদয় তাদের সাথে রয়েছে। আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং শেষ জিম্মিটি ফিরে না আসা পর্যন্ত থামবে না।”

হোস্টেজ এবং মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম গাজা থেকে বাকি সব মৃত জিম্মিকে উদ্ধারের জন্য নেতানিয়াহুকে জরুরিভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।

হামাস ও ইসরায়েল একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, রবিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা তাদের সৈন্যদের জন্য হুমকিস্বরূপ এক সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।

গত ১৩ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে গাজা থেকে জীবিত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ