সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় ক্রীড়া সংস্থার খেলার মাঠে এক মাস ধরে বাণিজ্য মেলা চলছে। আরও ২০ দিন আগে মাঠ দখলে নেন আয়োজকেরা। মাঠের চারপাশে আবাসিক এলাকা, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থাকায় শুরু থেকেই মেলার জন্য মাঠ বরাদ্দ না দেওয়ার দাবি ছিল এলাকাবাসীর। এ জন্য বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কিছুতেই কাজ হয়নি। এখন গভীর রাত পর্যন্ত মেলার মাইকের উচ্চ শব্দ ও গানবাজনায় অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ।

শুধু মেলার ভেতরে নয়, মেলার প্রচার ও লটারিতে অংশ নিতে মানুষকে উৎসাহিত করতে শহরজুড়ে চলছে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে মাইকে মেলার প্রচার। যদিও জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া অনুমতিপত্রে মেলার ভেতরেই মাইকের ব্যবহার নিষেধ রয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বাংলাদেশ বেনারসি মসলিন ও জামদানি সোসাইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু মেলার আয়োজকেরা মাঠটি দখলে নেন তারও ২০ দিন আগে। এলাকাবাসীর আপত্তির মুখে বিগত দিনেও আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালী মহল এখানে অনেকটা জোর করে দুই মাস, তিন মাস মাঠ দখল করে মেলা করেছে। এবার শুরু থেকেই এলাকাবাসী মেলার জন্য খেলার মাঠ বরাদ্দ না দিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, এই মাঠের চারপাশে আবাসিক এলাকা। কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ রয়েছে। এলাকার শিশু-কিশোরদের খেলার একমাত্র মাঠ এটি। এখানে মেলা আয়োজনের নামে মাইক দিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজানোয় এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটে। অসুস্থ লোকজন পড়েন বেশি বিপাকে। এমনিতেই মেলাতে উচ্চ শব্দে মাইক বাজে। রাত ১০টার পর শুরু হয় লটারি, চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই এই মাঠ বরাদ্দ না দিয়ে শহরের বাইরে কোথাও মেলার আয়োজনের কথা বলেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি, এখানে একটি বড় সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে মেলাকে ঘিরে। এই মেলার নামে অনেকেই সুবিধা নেয়। যে কারণে আমাদের দাবিতে কাজ হয়নি।’

গতকাল রোববার এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আবারও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে মেলায় উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো ও গানবাজনার নামে অশ্লীলতা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মো.

আবদুস শহীদ গাজী বলেন, ‘মাইক বন্ধ করা হবে বলে জেলা প্রশাসক আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমাদের দাবি হচ্ছে, আর যেন সময় বাড়ানো না হয়। এটি করা হলে আমরা এলাকাবাসী আন্দোলনে নামব।’

বিষয়টি নিয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও আলোচনা হয়েছে। সভায় সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘মেলার মাঠে মাইকের ব্যবহার, উচ্চ শব্দের বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক ব স আম দ র এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়াতের পর এবার সমাবেশে অংশ নিতে বিশেষ ট্রেন ভাড়া ছাত্রদলের

জামায়াতে ইসলামীর পর এবার বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশে অংশ নিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রাম ছাত্রদল ২০ বগির এই বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে।  

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশ করবে ছাত্রদল।

এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ২০ বগির একটি বিশেষ ট্রেনের জন্য আবেদন করা হয়। ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ রেলওয়ে। আগামী রোববার সকাল সোয়া ৭টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে এই ট্রেন ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে বেলা সোয়া ১টায়। এই ট্রেন সন্ধ্যা সাতটায় আবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০ বগির ট্রেনটিতে ১ হাজার ১২৬টি আসন রয়েছে। বিশেষ ট্রেন পরিচালনার জন্য রেলওয়ের চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রেল ভবনের অনুমোদন সাপেক্ষে বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই কারণে নিয়মিত ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না।

চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সাব্বির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন,  এই ট্রেনে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার প্রায় দেড় হাজার নেতা-কর্মী যাবেন। সবাই একসঙ্গে যেতে চাওয়ায় ট্রেন ভাড়া করেছেন। বাসে হলে তা সম্ভব ছিল না।

এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করেছিল জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশে নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম থেকে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করে দলটি। এই চার ট্রেন ভাড়া করতে দলটিকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ টাকা।

জামায়াতের ট্রেন ভাড়া করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ ট্রেন পরিচালনায় স্বাভাবিক নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ