পরের দিন ছিল বিপিএলের ফাইনালে ফরচুন বরিশালের ম্যাচ। কিন্তু দলটির ক্রিকেটার নাজমুল হোসেন তখন অনুশীলন করছিলেন ভিন্ন আঙিনায়। একাডেমি মাঠে বরিশালের সঙ্গে নয়, তাঁর ঠিকানা তখন মিরপুরের ইনডোর, সঙ্গে জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও বাকিরা।

তা না করে অবশ্য উপায়ও ছিল না নাজমুল। এর আগে টানা ৮ ম্যাচে বরিশালের একাদশে যে জায়গা পাননি! খেলেননি বিপিএলের শিরোপা জেতা বরিশালের হয়ে ফাইনালেও।

বিপিএলে নাজমুল সর্বশেষ ম্যাচ তিনি খেলেন ১৬ জানুয়ারি। অথচ তাঁর নেতৃত্বেই ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। জাতীয় দলের জন্য তাই আগেভাগেই নিজেকে প্রস্তুত করার কাজ শুরু করতে হয় নাজমুলকে।

টানা ম্যাচ না খেলা কি প্রভাব ফেলবে অধিনায়ক নাজমুলের ওপর? প্রশ্নটি ছিল আজ মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে আসা জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের কাছে।

উত্তরে সিমন্স বলেছেন, ‘আমি তার ব্যাপারে আপনাকে একটা জিনিস বলতে পারি, সে খুব কঠোর পরিশ্রম করছে, যখন থেকে খেলছে না, তখন থেকেই। সে জানতো খেলবে না, এ জন্য সে তার নিজের কাজটা করেছে। খেলাটা এখন ৫০ ওভারের। আর অধিনায়ক এই ফরম্যাটে খেলেনি এমন নয়। তবে তার একটা শক্ত মানসিক অবস্থা অবশ্যই প্রয়োজন হবে, আর আমার মনে হয় সেটা তার আছেও। ’

এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে রাখা হয়নি লিটন দাসকে। এখন পর্যন্ত আইসিসি টুর্নামেন্টে তাঁর ব্যাট হেসেছে বারবার। সবশেষ বিপিএলেও সেঞ্চুরিসহ ১১ ম্যাচে ৩৬৮ রান করেছেন লিটন। অবশ্য ওয়ানডেতে তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো নয়। সবশেষ সাত ম্যাচের একটিতেও দুই অঙ্কে যায়নি রান।  

সিমন্স অবশ্য আশা করছেন, লিটন দ্রুতই ফিরবেন দলে, ‘মজার ব্যাপার হচ্ছে, লিটনের সঙ্গে মাত্রই আমার কথা হলো। স্কোয়াডে না থাকলে খেলোয়াড়েরা হতাশ হবেই। কিন্তু আমার মনে হয় সে এটা বুঝতে পেরেছে এবং তার ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছে। বিপিএলের সময়ই আমরা তাকে ফর্মে ফিরতে দেখেছি। এমন একজন খেলোয়াড়কে আপনি মিস করবেন। কিন্তু সে এটা মেনে নিয়েছে যে রান করছিল না। আমি শুধু আপনাদের এটা বলতে পারি, ফিরে আসতে সে কঠোর পরিশ্রম করছে।’

সিমন্সের সংবাদ সম্মেলনে এসেছিল পেসার নাহিদ রানা প্রসঙ্গও। বিপিএলে ১৩ ম্যাচের ১২টিতেই খেলেছেন এই পেসার। তখনই তাঁকে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন উঠেছিল। এবার তা পৌঁছে গেছে সিমন্সের কাছেও, ‘শেষ কিছু ম্যাচ যদি দেখেন, তার গতি কমে গিয়েছিল। এমনকি রান আপও স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গিয়েছিল।’

শঙ্কার কথাটি বলার পরই নতুন করে আশার খবরও দিয়েছেন সিমন্স, ‘বিপিএল থেকে তার দল আগেভাগেই বাদ পড়ে যাওয়ার পর কিছু বিশ্রাম ও ছুটি সে পেয়েছে। কাল থেকে তাকে আবারও ধারালো মনে হচ্ছে। গতি ও রান আপ ফিরে এসেছে, ক্যারিবীয়ানের সেই গতিটা আবার পেয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল র ব প এল স মন স অবশ য

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ