শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বহিষ্কার করতে মজিবুর রহমান মঞ্জুর আহ্বান
Published: 13th, February 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বহিষ্কার করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ভারত সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আপনাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করুন, না হয় নিজেদের গণতন্ত্রী ও মানবাধিকার রক্ষাকারী হিসেবে পরিচয় দেবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে দলটির এক সমাবেশে মজিবুর রহমান এ কথা বলেন। গুম, খুন ও আয়নাঘরের নৃশংসতায় জড়িত খুনিদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মজিবুর রহমান বলেন, গুম, খুন, গণহত্যার বিচার না করলে খুনিরা সুযোগ পেলে আবার রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠবে। গণ-অভ্যুত্থানের সব পক্ষকে তারা আবার আয়নাঘরে বন্দী করবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ৫ আগস্ট সরকারের পতন না হলে আন্দোলনকারীদের অনেকেই পরে গুম খুনের শিকার হতেন।
সভাপতির বক্তব্যে দলটির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘শহীদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই এখন আমরা শুনি কেউ কেউ বলেন, বারবার ফ্যাসিবাদ নাকি শুনতে ভালো লাগে না। কেউ কেউ আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করার কথা বলেন। আমরা বলি, সবার আগে আমার ভাইয়ের, বোনের খুনিদের বিচার চাই।’
বিচারপ্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে আমলা, সাংবাদিক, পুলিশ ও সামরিক প্রশাসনের কর্তাদের আহ্বান জানান মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সবাই আন্তরিকভাবে বিচারকাজে সহায়তা করুন, নইলে আপনাদেরও হাসিনা একসময় আয়নাঘরে ঢোকাবে।’
এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের ১৬ বছরে যে গুম, খুন, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও শত শত আয়নাঘর করা হয়েছিল, তার তুলনা শুধু হিটলারের নাৎসি আর মুসোলিনির ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে হতে পারে। অনেকের জীবন, অনেক পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের স্মৃতি পর্যন্ত হারিয়ে গেছে, তাদের গল্প জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বি এম নাজমুল হক, লে.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।