জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও লড়ছেন অকুতোভয় তকু
Published: 15th, February 2025 GMT
মুখে কাঁচাপাকা খোঁচা দাড়ি। মাথায় পাতলা চুল। সব মিলিয়ে চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট। নিজেই জানালেন, বয়স প্রায় পঞ্চাশের কাছাকাছি। এমনই এক ভর্তি যোদ্ধা তাওহিদুর রহমান তাকু।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কলা ও আইন অনুষদের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ও অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৪১৮ নম্বর রুমে তার ভর্তি পরীক্ষার আসন পড়ে।
তাওহিদুর রহমান নওগাঁর এনায়েতপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও গয়রা তেঁতুলিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেছেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার কারণে পড়াশোনায় বড় গ্যাপ পড়ে যায়।
তিনি আরো জানান, তার বাড়ি নওগাঁ সদরে। দাখিল পরীক্ষা দিয়েছেন ২০২২ সালে, আর আলিম পরীক্ষা দেন ২০২৪ সালে।
তাওহিদুর রহমান বলেন, “আমি ১৯৮৯ সালে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর দীর্ঘদিন অসুস্থতার মধ্যেই কেটেছে। এখনো পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। ২০১৪/১৫ সাল নাগাদ মোটামুটি সুস্থ হলে পড়াশোনা চালিয়ে যাই। সুস্থ হওয়ার পর ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা না দেওয়ার কারণে আমাকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেখান থেকে নিয়ে এলে ২০১৯ সালে আবার পড়াশোনা শুরু করি। কাগজগুলো আমি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই তুলেছি এবং নিয়মিতদের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এর আগে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের অধীনে ‘সি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষায় দিয়েছেন তিনি।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রচারিত ডকুমেন্টরিতে ফুটেজ না থাকায় এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে হট্টগোল করা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ সেশন) সাবেক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে এ হট্টগোল করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দিল জাবি
জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে ওই ছাত্রদল নেতা উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে থাকেন, “এই ডকুমেন্টরিতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ডকুমেন্টরিতে ছাত্রদলের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমরাও আন্দোলন মাঠে ছিলাম, জেল-জুলুম, মামলা আমরাও খেয়েছি।”
এ সময় তার সঙ্গে শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রোমান রাশিদুল ও হাসান শাহরিয়ার রমিমকেও হট্টগোল করতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের জন্য তাদের দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে একটি মাত্র ক্যামেরা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট ও সময় না পাওয়ায় তাদের পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টরি নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তবে এ ঘটনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের এক প্রভাবশালী শিক্ষকের হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।
তারা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের পূর্বে তারা জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের পাঠানো ও সাংবাদিকদের থেকে সংগৃহীত ছবি ও ফুটেজ দিয়ে ডকুমেন্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি দাবি করেছেন তার ছবি বা ফুটেজ দেয়া হয়নি, তার ছবি বা ফুটেজ তাদের কাছে কেউ দেয়নি। এজন্য তারা ডকুমেন্টরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি?
এ নিয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজ যে একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেখেছি, এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য, এটাও ২৪ এর অর্জন। খারাপভাবে দেখার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে, এখানে শিক্ষার বিষয় রয়েছে। ঠিক একইসঙ্গে প্রতিবাদের যে ভাষা, সেখানেও শিক্ষিত হবার প্রয়োজন রয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমালোচনা ও কুৎসার পার্থক্য শিখবে। একইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসা ও পূজার পার্থক্য শিখবে ও বুঝবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী