Samakal:
2025-11-02@22:01:05 GMT

মিয়াওয়াকি গাছ বাড়ে ১০ গুণ গতিতে

Published: 15th, February 2025 GMT

মিয়াওয়াকি গাছ বাড়ে ১০ গুণ গতিতে

মিরসরাইয়ে তৈরি করা হয়েছে দেশের প্রথম ‘মিয়াওয়াকি’ ফরেস্ট।  স্থানীয় আমজাদ হোসেন পরীক্ষামূলকভাবে জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাপাহাড় এলাকায় এই কৃত্রিম বন তৈরি করেছেন। 
সরেজমিন প্রকল্প সোনাপাহাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সবুজের সমারোহে নান্দনিক স্থাপনায় গড়ে তোলা হয়েছে প্রকল্পটি। পাহাড়ের কোলে টিলা শ্রেণির জায়গাটির ৪ হাজার ৪০০ বর্গফুট এলাকাজুড়ে সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ‘মিয়াওয়াকি ফরেস্ট’। দূর থেকে দেখলে ১৩ মাস বয়সী কৃত্রিম বনটিকে মনে হবে যেন এক যুগ বয়সী বন। ছোট এ বনের ভেতরে ঢুকে চোখে পড়ে শত প্রজাতির গাছ আর লতাগুল্মের সমারোহ। দেখে মনে হয় এ যেন গাছের জাদুঘর। 
জানা গেছে, জাপানের বিখ্যাত উদ্ভিদবিদ আকিরা মিয়াও কি হচ্ছেন এই মিয়াওয়কি ফরেস্ট ধারণার উদ্ভাবক। এই পদ্ধতিতে ছোট ছোট জায়গায় অল্প সময়ে বয়স্ক বনের আদল তৈরি করা যায় পরির্পূণ বন। তার উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করে মাত্র ৩০ বর্গফুটের মধ্যেও বন তৈরি করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে লাগানো গাছ সাধারণ বনের গাছের চেয়ে ১০ গুণ দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায় এবং বছরে অন্তত এক মিটার বাড়ে। মিয়াওয়াকি উদ্ভাবিত এই বন তৈরির পদ্ধতি ব্যবহার করে কোনো স্থানে ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে গভীর বন তৈরি করা সম্ভব। আর এই বনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অন্য সাধারণ বন থেকে এই বন ৩০ গুণ বেশি কার্বন-ডাইঅক্সাইড শোষণ করতে পারে। বর্তমানে আকিরা মিয়াওয়াকির এ ধারণা কাজে লাগিয়ে নেদারল্যান্ডস ও ভারত তাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘মিয়াওয়াকি ফরেস্ট’ গড়ে তুলে সুফল পাচ্ছে। বাংলাদেশে মিরসরাই উপজেলার সোনাপাহাড় এলাকায় ‘প্রকল্প সোনাপাহাড়’ প্রকল্পে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে এই ‘মিয়াওয়াকি ফরেস্ট’ ধারণার বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। 
যেভাবে শুরু হয়েছে বন তৈরির কাজ : মিরসরাই উপজেলার ‘প্রকল্প সোনাপাহাড়’ প্রকল্পটিতে মিয়াওয়াকি ফরেস্ট তৈরিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্রের উদ্যোক্তা ও পরিচালক দেলোয়ার জাহান। তিনি বলেন, মিরসরাই মিয়াওয়াকি ফরেস্ট তৈরিতে প্রথমে মাটি প্রস্তুত করা হয়েছে। সে মাটিতে জৈব সার হিসেবে গাছের গুড়ি, খড় ও লতাপাতা পচা ব্যবহার করা হয়েছে। আলাদা জায়গায় মাটি প্রস্তুত করে সে মাটি নির্দিষ্ট জায়গার নিচ থেকে ওপরে কিছুটা ঢালু করে বিছানো হয়েছে। তারপর সেখানে দুই বর্গফুট জায়গার চার কোণে চারটি করে গাছ লাগানো হয়েছে। চার হাজার ৪০০ বর্গফুট জায়গায়  স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা ১২০ প্রজাতির গাছ ও লতাগুল্ম লাগানো হয়েছে। তুলসী থেকে কদম, বাসক থেকে বেত সব ধরনের প্রজাতির সম্মেলন 
ঘটানো হয়েছে এই বনে। লাগানোর পর থেকে ১৩ মাস বয়সী গাছগুলোর কোন কোনটির উচ্চতা সত্তর ফুট পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে এখন। বলতে পারি  মিয়াওয়াকি ফরেস্ট তৈরির চেষ্টায় সফল হয়েছি আমরা।’
মিরসরাইয়ে প্রকল্প সোনাপাহাড়  প্রকল্পটির উদ্যোক্তা আমজাদ হোসেন  বলেন, ‘আমরা যখন সোনাপাহাড় এলাকার এই জায়গাটির সন্ধান পায় সেটি তখন পরিবেশ বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত ছিল। এখানে প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটা চলতো। ইটভাটার জন্য মাটি কেটে উর্বর জমিতে গভীর পুকুর তৈরি করা হতো। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় প্রাণ-প্রকৃতির যখন নাভিশ্বাস উঠছিল আমরা তখন এখানে প্রকৃতির সেবার দায়িত্ব নিয়েছি। এখানে আমরা প্রকৃতির কোন ক্ষতি না করে প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোর জন্য সংরক্ষিত পর্যটনের ব্যবস্থা করছি। প্রকল্পে বৈচিত্র্য আনতে এখানে হাজার রকম গাছ ও লতা গুল্মের সন্নিবেশ করা হয়েছে। মিয়াওয়াকি ফরেস্ট তৈরি আমাদের সেই চেষ্টারই অংশ।’ 
মিরসরাইয়ের ‘প্রকল্প সোনাপাহাড়’–এ গড়ে তোলা মিয়াওয়াকি ফরেস্ট সম্পর্কে উদ্ভিদ গবেষক মোকারম হোসেন বলেন, ‘অল্প সময়ে বন সৃষ্টির দারুণ এক পদ্ধতি মিয়াওয়াকি ফরেস্ট। দেশে বন বিলুপ্তির এই সময়ে মিরসরাইয়ে ‘প্রকল্প সোনাপাহাড়’ এর উদ্যোগে মিয়াওয়াকি ফরেস্ট তৈরির মডেল প্রকল্পটি একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। আমার জানা মতে মিরসরাই ছাড়া এখন পর্যন্ত দেশে আর কোনো মিয়ওয়াকি ফরেস্ট নেই। সরকারি ন্যাড়্যা পাহাড়গুলোতে আগ্রহী ব্যক্তিদের অংশীজন করে এই ফরেস্ট সৃষ্টি করা যায়।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প স ন প হ ড় স ন প হ ড় এল ক ফর স ট ত র ম রসর ই বন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ