চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ ছাত্রীসহ ১২ শিক্ষার্থীকে গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৯ ছাত্রীর বহিষ্কার বাতিল চেয়ে আজ রোববার দুপুরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের পদত্যাগ দাবি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

৯ ছাত্রীর বহিষ্কার বাতিল ও প্রক্টরের ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের প্রতিবাদে আয়োজিত এ মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ক্রিয়াশীল দলের নেতা-কর্মীরাও যোগ দেন। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘অন্যায় বহিষ্কার, মানি না, মানব না’; ‘আমার বোন মধু না, এই প্রক্টর মানি না’; ‘জুলাইয়ের হাওয়া এখনো বইছে’ ইত্যাদি লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান করেন। শিক্ষার্থীরা এ ছাড়া কর্মসূচিতে ‘ন্যায়বিচার অধিকার, দিতে হবে, দিতে হবে’; ‘প্রহসনের বহিষ্কার, মানি না, মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন কর্মসূচিতে।

মানববন্ধনে স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির মুখপাত্র জগলুল আহমেদ বলেন, ‘প্রক্টরের বিতর্কিত ফেসবুক পোস্টের কারণে আজ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় লজ্জিত। আপনার (প্রক্টর) কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইজ্জত গেছে। আপনি ক্ষমা চান, না হয় পদত্যাগ করেন। ছাত্ররাই কিন্তু আপনাদের সহকর্মীদের পতন ঘটিয়েছে, নিজের পতন ডেকে আনবেন না। ছাত্রীদের বহিষ্কার আদেশ অবিলম্বে বাতিল করেন।’ পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি রোনাল চাকমা বলেন, অবিলম্বে এ বহিষ্কার আদেশ বাতিল করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের পেশাদারত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক পরিচয়ে কেউ ঘরোয়া পোশাকে থাকা ছাত্রীদের ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করতে পারেন না।

সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা, ধর্ম অবমাননার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা হল’–এর ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ওই হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করতে যাওয়া কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিতণ্ডাও হয় আবাসিক ছাত্রীদের। পাশাপাশি এ সময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছনার অভিযোগ ওঠে।

ছাত্রীদের অভিযোগ, তাঁরা নৌকা ভাঙার বিপক্ষে নন; বরং প্রশাসন যেন এটি ভাঙে, সে দাবি করেছিলেন। এ জন্য তাঁরা আগেই প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তবে প্রশাসন সেটি ভাঙেনি। উল্টো মধ্যরাতে একদল শিক্ষার্থী সেটি ভাঙতে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এ কারণেই তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক কোরবান আলীকে শারীরিক লাঞ্ছনা করতে দেখা গেছে এক ছাত্রীকে। এ ছাড়া কয়েকটি ভিডিওতে প্রক্টরিয়াল বডির একাধিক সদস্যকে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে দেখা যায়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে হত্যা করার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রংপুর–দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বক্তারা বলেন, নিজ বাড়িতে দম্পতিকে হত্যা করা হলো অথচ পুলিশ গত পাঁচ দিনেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারল না। ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

মানববন্ধনে রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক আনছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক শাজাহান খান, সদস্যসচিব ফজলার রহমান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক আলী হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি রেজাউল করিম বক্তব্য দেন।

পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে খুন হন বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়। গত রোববার সকালে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে মই বেয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রধান দরজার চাবি খুঁজে পেয়ে খুলে ঘরে ঢোকার পর প্রথমে ডাইনিং রুমে যোগেশ চন্দ্র রায়ের ও রান্নাঘরে সুবর্ণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান তাঁরা।

আরও পড়ুনরংপুরে নিজ বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যোগেশ চন্দ্র রায় ও সুবর্ণা রায়ের লাশ তাঁদের বাড়ি নিয়ে আসা হয়। এরপর যোগেশ চন্দ্র রায়কে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রীয় সম্মান শেষে তাঁদের সৎকার করা হয়। এ ঘটনায় দম্পতির বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পদচারী–সেতু নির্মাণের দাবিতে গাজীপুরে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ
  • শিবচরে শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
  • রংপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন