চকলেট উৎপাদন বৃদ্ধিতে নতুন মূলধনি যন্ত্র আমদানি করবে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ
Published: 17th, February 2025 GMT
চকলেট উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজনের লক্ষ্যে নতুন মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। গতকাল রোববার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে অলিম্পিক। বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের লোলাতি কারখানায় নতুন এই আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। মোট ১৩ কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকায় এসব যন্ত্রপাতি হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এম/এস লিংক সোর্সিং লিমিটেড থেকে কেনা হবে। এসব যন্ত্রের বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ৩ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন।
এসব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করে কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাজারে উচ্চমানের চকলেটপণ্যের চাহিদা পূরণ করতে চায় অলিম্পিক। এতে চকলেটের ক্রমবর্ধমান বাজারে অলিম্পিকের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে বলে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ মনে করছে।
এই কৌশলগত বিনিয়োগ কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও মুনাফা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোম্পানির পর্ষদের ধারণা, নতুন যন্ত্রপাতি শুধু উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিই নয়, পণ্যের গুণগত মান উন্নত করতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
গত এক বছরে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২১৯ টাকা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ১১৬ টাকা ৩০ পয়সা। এ ছাড়া ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ, ২০২৩ সালে ৬০ শতাংশ, ২০২২ সালে ৪৫ শতাংশ, ২০২১ সালে ৫৪ শতাংশ ও ২০২০ সালে ৫২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
১৯৭৯ সালে যাত্রার শুরুতে কোম্পানিটির নাম ছিল বেঙ্গল কার্বাইড লিমিটেড। ১৯৯৬ সালে নাম বদল করে হয় অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সেই বছর থেকে বিস্কুট ও কনফেকশনারি ব্যবসায় নাম লেখায় প্রতিষ্ঠানটি। তাতে সাফল্যও আসে কয়েক বছরে। এরপর ব্যবসার পরিধি বেড়েছে। যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন পণ্য ও উৎপাদন লাইন। এর আগে ১৯৮৭ সালে কোম্পানিটি তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফুডসের নামে সয়াবিন তেল ও ভেজিটেবল ঘি বাজারে আনে।
বাজারে অলিম্পিকের ব্যাটারিও পাওয়া যায়। তবে এখন খাদ্যপণ্য থেকে কোম্পানিটি সিংহভাগ রাজস্ব আয় করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চকল ট
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।