এখন থেকে পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের (এনআইডি) ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেবে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে পাঠানো এ–সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা এই সারসংক্ষেপ অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছে তাঁর প্রেস উইং। এখন এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এর আগে গতকাল রোববার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিধান বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিক অধিকার।

পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করার পেছনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তি হচ্ছে, ইতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। বিদ্যমান পদ্ধতিতে একটি সাধারণ পাসপোর্ট ১২ কর্মদিবস ও এক্সপ্রেস ডেলিভারির ক্ষেত্রে তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে থাকে।

কিন্তু পুলিশ ভেরিফিকেশন যথাসময়ে না পাওয়ার কারণে বা পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনাবশ্যক কাগজপত্র যাচাইয়ের কারণে আবেদনকারীর ভোগান্তি হয়। আবেদনকারীর ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি যথাসময়ে পাসপোর্টপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জনভোগান্তি লাঘবে পাসপোর্ট সেবা সহজ করতে পরিপত্রে বেশ কিছু নির্দেশনা থাকবে।

এক.

নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাই করা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া পাসপোর্ট দেওয়া হবে।

দুই. বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়া হবে।

তিন. পাসপোর্ট পুনঃ ইস্যুর ক্ষেত্রে বিদ্যমান পাসপোর্টের সঙ্গে মৌলিক তথ্যের পরিবর্তন হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে।

চার. পাসপোর্ট আবেদনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডেটাবেজ বা জন্মনিবন্ধন ডেটাবেজের সঙ্গে যাচাই করা হলে তা বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩ এর ৫ (২) ধারার উদ্দেশে পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষ হয়েছে বলে গণ্য হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, মঙ্গলবারের মধ্যে পরিপত্র জারি হবে। পরিপত্র জারির পর থেকে এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 

জুলাই গণঅভ্যত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত আর্থিক অনুদানের চেক ও তিন শহীদ পরিবারের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আর্থিক অনুদানের চেক ও  সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মানিত কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার, শহিদ পরিবারের সদস্যগণ, ছাত্র প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।

এ সময় ৪ জন শহিদ পরিবারের সদস্যের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন যোদ্ধাকে এককালীন ১ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর সন্তানরা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। তাঁদের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও অদম্য চেতনা আমাদের জাতি পুনর্গঠনের অনুপ্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, এই যোদ্ধাদের সাহসিকতা দিয়েই গড়ে উঠবে একটি নতুন, উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন-অগ্রগতির যাত্রায় আমরা তরুণ সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করি। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই গড়ে তুলবে একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল নারায়ণগঞ্জ।

এদিকে এ অনুষ্ঠানটি শুধু অনুদান বিতরণ নয়, বরং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান জানানোর এক অনবদ্য প্রয়াস হয়ে উঠেছিল।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশ চূড়ান্ত: ইসি সানাউল্লাহ
  • না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান 
  • জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের সাবেক ডিজির এনআইডি ব্লক