ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নতুন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, তিনটি কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে চান তিনি। সেগুলো হলো করপোরেশনের প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণের আগে জনমত যাচাই, পরিবেশ রক্ষা ও দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং আবাসনে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে নগর ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথাগুলো বলেন মোহাম্মদ এজাজ। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের মতামত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে যেকোনো উন্নয়নকাজ করতে চান বলেও জানান তিনি।

গত বুধবার মোহাম্মদ এজাজকে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে তিনি রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় উত্তর সিটির নতুন প্রশাসক বলেন, ‘রাজধানীর পরিবেশগত সমস্যাগুলোর অন্যতম জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ বছর জলাবদ্ধতা সহনশীল ও ম্যানেজেবল পর্যায়ে থাকবে। তবে জলাবদ্ধতা যে হবে না, তা বলা যাবে না।’

তিনটি কাজ অগ্রাধিকারভিত্তিতে করতে চান জানিয়ে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে, প্রতিটি পদক্ষেপে গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করা। এ জন্য গণশুনানি ও পঞ্চায়েতব্যবস্থা সক্রিয় করার মাধ্যমে মানুষের কথা শুনে উন্নয়নকাজ করা হবে। দ্বিতীয়ত, পরিবেশ রক্ষা ও দূষণরোধ। আর তৃতীয় কাজটি হবে আবাসনে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা। রাজধানীর ৪০ শতাংশ মানুষ ন্যূনতম আবাসনসুবিধার বাইরে রয়েছেন বলেও এ সময় জানান তিনি।

রাজধানীর মাঠ ও পার্কগুলো বিভিন্ন ক্লাবের দখলে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নতুন প্রশাসক বলেন, ঢাকা উত্তর সিটির আওতাধীন সব মাঠ ও পার্ক জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। খোলা জায়গা বাড়ানো হবে অন্যতম অগ্রাধিকার। এ ছাড়া বেদখলে থাকা জনপরিসর ও খোলা জায়গা উদ্ধার করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, মূল সড়ক থেকে অননুমোদিত ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করা হবে। পিভিসি ব্যানার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। রাস্তার পাশে দেয়ালে আঁকা জুলাই গ্রাফিতিগুলো রক্ষা করা হবে। আর যাঁরা পোস্টার-ব্যানার লাগাবেন, তাঁদের দ্বারা পোস্টার শুধু অপসারণই নয়, জরিমানাও করা হবে।

উত্তর সিটির আওতাধীন রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেবেন বলে জানান মোহাম্মদ এজাজ। মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় কম্পিউটার সরঞ্জাম সরবরাহ, দুর্নীতি বন্ধে নগরবাসীকে সচেতন করা ও সিটি করপোরেশনকে দলীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন নতুন প্রশাসক।

এর আগে লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য শহর করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরিবেশ যেন ভালো থাকে, বাতাস বিশুদ্ধ হয়, নদী-খালগুলো বাঁচে, সবার জন্য উন্মুক্ত জায়গা যেন থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে। শিশুর খেলাধুলা, মানুষের হাঁটাচলা ও বসা, রাস্তা, পানি সরবরাহ এবং পয়োনিষ্কাষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে যাতে কাজ করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মতবিনিময় সভা শেষে ঢাকা উত্তর সিটির বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় তিনটি অবৈতনিক উপদেষ্টা কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন নতুন প্রশাসক। তিন কমিটি হলো বায়োডাইভারসিটি (জীববৈচিত্র্য) কমিটি, ডায়াসপোরা (প্রবাসী) কমিটি ও সাধারণ উপদেষ্টা কমিটি।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবু সাঈদ মো.

কামরুজ্জামান, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকসহ করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ পদক ষ প পর ব শ ক জ কর করপ র

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রুটে দুই ট্রেনের সময় বদলে যাচ্ছে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলা সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে নতুন করে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন সময়সূচি আগামী ১০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি এখন সকাল সোয়া ৬টায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়। নতুন সূচি অনুযায়ী, পরীক্ষামূলকভাবে এ ট্রেন চলাচল করবে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে।

আর কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২ নম্বর ট্রেন) ট্রেনটি কক্সবাজার স্টেশন ছাড়বে সকাল ১০টায়। এখন এ ট্রেন ছাড়ে ১০টা ২০ মিনিটে। গত মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত সৈকত এক্সপ্রেস ও প্রবাল এক্সপ্রেসের সময়সূচি পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের উপপ্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান।

রেলওয়ের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের চাহিদা ও সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনার জন্য কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রামমুখী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে এখন দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলাচল করে আরও দুই জোড়া আন্তনগর ট্রেন।

কক্সবাজার রেললাইনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর। প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয়। এরপর গত বছরের জানুয়ারিতে চলাচল শুরু করে পর্যটক এক্সপ্রেস। এটাও দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন না দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

গত বছরের ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ট্রেন। এরপর ইঞ্জিন ও কোচের সংকটের কথা বলে গত বছরের ৩০ মে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে রেলওয়ে। গত বছরের ১২ জুন থেকে আবার চালু হয় ট্রেন। আর নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।

সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রী ওঠানামার জন্য ষোলশহর, জানালী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে থামবে।

আর প্রবাল এক্সপ্রেস যাত্রাপথে থামবে ষোলশহর, গোমদণ্ডী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ