রাজশাহীর হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকেরা। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া এলাকায় সরকার কোল্ড স্টোরেজের সামনে তারা এ বিক্ষোভ করেন। কৃষকেরা রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে ৮ বস্তা আলু ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। স্থানীয় বিএনপি এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়েছে।

ক্ষুব্ধ কৃষকেরা জানান, প্রতি কেজি আলু সংক্ষণের জন্য আগে রাজশাহীর হিমাগারগুলোকে ৪ টাকা ভাড়া দিতে হতো। এবার তা বৃদ্ধি করে ৮ টাকা করা হয়েছে। ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই তারা দ্রুত আগের ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান। হিমাগারে ভাড়া না কমালে এবার তারা প্রয়োজনে আলু ফেলে দেবেন কিন্তু হিমাগারে রাখবেন না।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে কৃষকেরা ওই এলাকায় পথসভাও করেন। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। তিনি বলেন, ‘‘হিমাগার মালিকেরা সিন্ডিকেট করে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধি করেছেন। এ ভাড়া কার্যকর হলে বাজারে আলুর দাম বাড়বে। এটি হতে দেওয়া হবে না।’’

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় ঘন কুয়াশায় ২টি সড়ক দুর্ঘটনা, আহত ১৫

বাবার জন্য খাবার নিয়ে যাওয়া হলো না শাকিবের

তিনি বলেন, ‘‘কৃষকের ওপর বুলডোজার চালিয়ে কাউকে ভাড়া বৃদ্ধি করতে দেওয়া হবে না। হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে।’’ 

আগের বছরগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা হতো বস্তা হিসেবে। ৫০ কেজির প্রতি বস্তার জন্য ভাড়া নেওয়া হতো ৩৪০ টাকা। হিমাগার মালিকেরা ৫০ কেজির বস্তাতেই আলু দেওয়ার কথা বললেও ফড়িয়ারা ৮০ কেজির বস্তাতেও আলু রাখতেন। এতে হিমাগার মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। তাই তারা এবার নিয়ম করেছেন, কেজি হিসেবে সংরক্ষণ ভাড়া নেওয়া হবে।

হিমাগার মালিকেরা জানান, ৫০ কেজির বস্তার জন্য আগে ৩৪০ টাকা নেওয়া হলে ভাড়া পড়ত ৬ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু ফড়িয়ারা বস্তায় এত বেশি আলু দিতেন যে, ভাড়া পড়ত ৪ টাকা। অথচ বস্তায় ৫০ কেজির বেশি আলু না ঢোকানোর জন্য সরকারের নির্দেশনাও আছে। তা প্রতিপালন না করায় বাধ্য হয়ে তারা কেজি হিসেবে ৮ টাকা করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘ভাড়া কেন্দ্রীয়ভাবেই নির্ধারণ হয়। এবারও সেটাই হয়েছে। ৫০ কেজির বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য আমরা এবার কেজি হিসাবে গিয়েছি। কারণ, বেশি ওজনের বস্তা টানা হিমাগারের শ্রমিকদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা কেজি হিসেবে গেলেও এটা বলছি না যে, ৮ টাকাই দিতে হবে। হিমাগার মালিকেরা যে যার সক্ষমতা অনুযায়ী এ ব্যাপারে ছাড় দেবে।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে ভালো হয় এ ব্যাপারে সরকার হস্তক্ষেপ করলে। সরকার তো সব বিষয়ই দেখছে। সবকিছু পর্যালোচনা করে সরকার সবার জন্য একটা যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণ করে দিলে ভালো হয়। সরকার যদি এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়, আমরা তা মেনে নেবো।’’ 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ৫০ ক জ র ব র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”

আরো পড়ুন:

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর

ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার

তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে  জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”

বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”

তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ