ভারতীয়দের সব প্রশ্নেই নাহিদ রানা
Published: 19th, February 2025 GMT
একসময় ছিলেন সাকিব আল হাসান, এখন কি তবে নাহিদ রানা?
প্রশ্নটা উঠছে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের জায়গা থেকে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আগামীকাল বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। তার আগে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আজ সাকিবকে নিয়ে সাকল্যে একটি প্রশ্নই হলো। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো টুর্নামেন্টে তাঁর মতো একজনের বাংলাদেশ দলে না থাকাটা খারাপ হলো কি না, ভারতের এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘জি না।’
আইপিএলে খেলার সুবাদে একটা সময় সাকিবকে নিজেদের মানুষই মনে করত ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের আগে সাকিবই হতেন তাদের বড় কৌতূহলের জায়গা। নতুন বাস্তবতায় সাকিব এখন দৃশ্যপটে নেই। তাঁকে নিয়ে তাই প্রশ্নেরও আকাল। তবে নতুন চরিত্র হিসেবে সামনে চলে এসেছেন বাংলাদেশ দলের পেসার নাহিদ রানা। সংবাদ সম্মেলনে হওয়া ১৬-১৭টি প্রশ্নের অর্ধেকেই কোনো না কোনোভাবে এসেছে রানার নাম। সেসব প্রশ্নের বেশির ভাগই ভারতীয় সাংবাদিকদের করা।
এখনো আইপিএলে নাম না লেখানো রানাকে নিয়ে কৌতূহল অবশ্য অন্য জায়গায়। কয়েক বছর ধরে বদলে যেতে থাকা বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণের ‘পোস্টার বয়’ তিনি। তাঁর আগমনেই যেন পূর্ণতা পেল বাংলাদেশের গতিময় বোলিং। গতি আর পারফরম্যান্সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শিরোনামপ্রত্যাশী উপস্থিতি রানার। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছেও তিনিই হয়ে উঠলেন কেন্দ্রীয় চরিত্র।
সংবাদ সম্মেলনে কখনো নাহিদ রানার বোলিং নিয়ে প্রশ্ন হলো, কখনো তাঁর চোট ব্যবস্থাপনা নিয়ে, কখনো আবার নাহিদ রানাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দলের বদলে যাওয়া পেস বোলিং আক্রমণ নিয়ে। এই প্রথম নাহিদ আইসিসির কোনো ইভেন্টে খেলছেন। এমনিতেই নতুন অভিজ্ঞতা, তার ওপর প্রথম ম্যাচেই মাথার ওপর ভারতীয় চাপ। অবশ্য খেলায় কী হবে, কে জানে, তার আগে সেই চাপটা আজ নাজমুল হোসেনের সংবাদ সম্মেলনেই বেশি অনুভূত হলো।
নাজমুল অবশ্য বলেছেন, রানা এসব চাপ-টাপ নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না। তাঁকে দেখে অন্তত সে রকম কিছু মনে হচ্ছে না অধিনায়কের, ‘যে রকম বোলিং করছে, ওর প্রতি বাড়তি নজর থাকবেই। তবে ওকে দেখে মনে হচ্ছে না সে চাপ নিচ্ছে, এত বড় টুর্নামেন্টে এসেছে। প্রস্তুতি নিচ্ছে ভালোভাবে। কাল যদি ওর খেলার সুযোগ থাকে, আমি বিশ্বাস করি সেরাটাই দেবে।’
বিপিএলে টানা ম্যাচ খেলায় নাহিদ রানাকে নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা জেগেছিল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টের আগে না আবার চোট-আঘাত পেয়ে বসেন! নাজমুল আশ্বস্ত করেছেন, সে রকম কোনো শঙ্কা এখন আর নেই, ‘রানা ঠিক আছে। অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছে, তবে এখন ঠিক আছে। ফিজিও, ট্রেনার কাজ করেছে। ও খেলার জন্য প্রস্তুত আছে।’
নাজমুলের বিশ্বাস, রানার ভালো করা মানেই বাংলাদেশের ভালো করা, ‘গত কয়েকটা ম্যাচে সে ভালো বোলিং করেছে। অনেক জোরে বল করেছে। সে যদি এভাবেই বোলিং করে, সেটা আমাদের পুরো বোলিং বিভাগকেই সাহায্য করবে। প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারবে, এ রকমই বোলিং চাই। ওর বোলিংটা আমাদের জন্যও প্রেরণা। সে যেন ফিট থাকে এবং এই ফর্ম ধরে রাখতে পারে।’
ভারতীয়দের বড় আগ্রহের জায়গা—কীভাবে এ রকম বদলে গেল বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিট? এত এত পেসারের জোগান সম্ভব হচ্ছে কীভাবে? সন্দেহ নেই, তাঁদের মনে এমন আগ্রহ উসকে দিচ্ছে নাহিদ রানার গতি। নাজমুল অবশ্য বিস্তারিতভাবেই চেয়েছেন তাঁদের সে কৌতূহল মেটাতে, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটের ধরন ও বল পরিবর্তনটা গুরুত্বপূর্ণ এখানে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ওরা ডিউক বলে বোলিং করে এবং ওদের দিয়ে প্রচুর বোলিং করানো হয়। আমাদের ফাস্ট বোলাররাও এখন উজ্জীবিত যে তারা যেকোনো কন্ডিশনে ভালো বোলিং করতে পারে।’
পেস বোলিংয়ে এমন ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বিসিবিকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘বিসিবিকে ধন্যবাদ, তারা ফাস্ট বোলারদের নিয়ে ভেবেছে। স্থানীয় কোচদেরও অবদান আছে এখানে।’
বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের ছবিটা নতুন করে তুলে ধরা নাহিদ রানা এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজের দায়িত্বটাও একটু বাড়িয়ে নিলেন!
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবশ য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”
আরো পড়ুন:
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর
ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার
তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”
বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”
তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল