জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশে আসছেন মার্চের মাঝামাঝি
Published: 23rd, February 2025 GMT
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন ও তাদের জন্য আরো সহায়তা জোগাড়ের আলোচনার লক্ষ্য নিয়ে মার্চ মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সফরে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপ বলেছেন, বাংলাদেশ সফরে মহাসচিব গুতেরেস কক্সবাজারের শিবিরের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করবেন।
আরো পড়ুন:
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডাকাতি, গুলিবিদ্ধ ৪
টেকনাফে ২ লাখ ইয়াবাসহ ৭ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় রবিবার সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপ। ছবি: পিআইডি
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করতে এলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জুলি বিশপের বৈঠক হয়। সেখানে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর নিয়ে তথ্য দেন।
বৈঠকে তারা রোহিঙ্গা সংকট, এর সমাধানের নতুন উপায় অনুসন্ধান এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শিবিরে বসবাস করা দশ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার জন্য নতুন দাতাদের সম্পৃক্ত করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জাতিসংঘ চলতি বছরের শেষের দিকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী জুলি বিশপকে এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় মুখ্য ভূমিকা পালন করার আহ্বান রেখে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আপনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।”
মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড যৌথভাবে এই সম্মেলনের সহযোগী হতে সম্মত হয়েছে, বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস গৃহযুদ্ধ-বিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যে মানবিক সংকট লাঘব করতে এবং মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা নতুন শরণার্থীদের আগমন রোধে জাতিসংঘের বিশেষ দূতের সহায়তা চেয়েছেন।
বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির নতুন দিক নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে অনিশ্চয়তার পর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরো দাতা সংগ্রহের বিষয়ে আলোচনা হয়।
জুলি বিশপ রোহিঙ্গাবিষয়ক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে ব্যাপভাবে সফল করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ সম্মেলনটি দশকব্যাপী সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা/হাসান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।