অনেকে ভাবতে পারেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাঁর আশপাশে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা তাঁর অনুগত বা চাটুকার। কিন্তু তাঁরা নিছক চাটুকার নয়; আদতে বাস্তবতা একটু ভিন্ন। ওয়াশিংটন পোস্ট–এর সাবেক রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট অ্যান টেলনেস বিষয়টি ভালোই জানেন।

গত মাসে তিনি তাঁর চাকরি ছেড়ে দেন। কারণ, তাঁর সম্পাদক তাঁর আঁকা সর্বশেষ কার্টুনটি ছাপতে রাজি হননি। ওই কার্টুনে অ্যান টেলনেস অ্যামাজন ও ওয়াশিংটন পোস্ট–এর মালিক জেফ বেজোস, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস–এর মালিক প্যাট্রিক সুন-শিয়ং, ওপেন এআইয়ের ধনী উদ্যোক্তা স্যাম অল্টম্যান, মেটার মালিক মার্ক জাকারবার্গ এবং কার্টুন চরিত্র মিকি মাউসকে (যা ডিজনি ও এবিসির প্রতীক) ট্রাম্পের মূর্তির সামনে মাথা নত করে থাকার ছবি আঁকা হয়েছিল।

টেলনেস তাঁর পদত্যাগের ব্যাখ্যায় লিখেছিলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের মালিকদের দায়িত্ব হলো মুক্ত গণমাধ্যম রক্ষা করা; কিন্তু একনায়কতন্ত্রের দিকে ঝুঁকে থাকা কারও অনুগ্রহ পেতে চাইলে তা কেবল মুক্ত গণমাধ্যমের ক্ষতিই করবে।’

অনেক সমালোচকের মতো টেলনেসও মনে করেন, বড় ব্যবসায়ী ও ধনকুবেররা ট্রাম্পের আশীর্বাদ পেতে চাইছেন শুধু তাঁদের ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করতে এবং সরকারি ঠিকাদারি কাজ পাওয়ার আশায়। অনেকে মনে করতে পারেন, ট্রাম্পের আনুগত্য স্বীকার করে ধনকুবের ও বড় করপোরেশনগুলো যেন এক স্বৈরশাসকের কাছে মাথা নিচু করছে; কিন্তু বাস্তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ উল্টো।

আসলে বিলিয়নিয়ার ও বড় করপোরেশনগুলো ট্রাম্পের আনুগত্য স্বীকার করছে না। বরং তারা ট্রাম্পের প্রশাসনকে তাদের স্বার্থরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে তাঁরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারি নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে একদম মুক্ত পথে ব্যবসা চালাতে পারবেন। তাই বলা চলে, এই ধনী অভিজাত শ্রেণিই ট্রাম্পকে চালাচ্ছেন; ট্রাম্প তঁাদের চালাচ্ছেন না। 

এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ, মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে এক বৈঠকে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে তাঁর কোম্পানির বাজার অংশীদারি বেড়েছে এবং প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মুনাফা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের কাছে এমন একটি মার্কিন প্রশাসন রয়েছে, যারা আমাদের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো নিয়ে গর্বিত, যারা আমেরিকান প্রযুক্তির জয় চায় এবং বৈশ্বিকভাবে আমাদের মূল্যবোধ ও স্বার্থ রক্ষা করবে…আমি আশাবাদী। এতে নতুন অগ্রগতি ও উদ্ভাবনের দুয়ার খুলবে।’

অর্থাৎ, ধনী ব্যবসায়ী ও বড় করপোরেশনগুলোর আসল লক্ষ্য তাঁদের মুনাফা রক্ষা করা। ট্রাম্প যদি সেই স্বার্থ পূরণ করতে পারেন, তাহলে তাঁর সামনে মাথা নিচু করতেও তাঁরা রাজি আছেন। এটি বোঝার সহজ উপায় হলো, গত এক বছরে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা। যেমন ইলন মাস্ক, মিরিয়াম অ্যাডেলসন এবং লিন্ডা ম্যাকমাহোন—এই ধনকুবেররা ট্রাম্পের ২০২৪ সালের প্রচারাভিযানে শত শত মিলিয়ন ডলার ঢেলেছেন। নির্বাচনের পর মাস্ক, অল্টম্যান, বিবেক রামাস্বামী, অ্যাপলের টিম কুকসহ অ্যামাজন, মেটা, ব্যাংক অব আমেরিকা, গোল্ডম্যান স্যাকস-এর মতো বিশাল করপোরেশনগুলো ট্রাম্পের অভিষেক তহবিলে ১৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। 

এ ছাড়া ডিজনি-এবিসি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলায় ১৫ মিলিয়ন ডলার এবং মেটা তাঁকে নিষিদ্ধ করার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। এই বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ দেখে বোঝা যায়, ধনকুবেররা মূলত ট্রাম্প প্রশাসনে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চান। তাঁরা হয়তো সরকারি চুক্তি, নীতিগত সুবিধা কিংবা প্রেসিডেন্টের ওপর সরাসরি প্রভাব রাখার জন্যই তাঁকে সমর্থন দিচ্ছেন।

২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প একের পর এক নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছেন। এসব আদেশ মূলত বড় ব্যবসাগুলোর স্বার্থ রক্ষা করছে। যেমন জাতীয় জ্বালানি জরুরি অবস্থা ঘোষণা এবং সরকারি ব্যয়ের দক্ষতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা। প্রথম আদেশে জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়িয়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নীতিকে দুর্বল করা হয়েছে। এতে তেল ও কয়লা কোম্পানিগুলো লাভবান হবে। দ্বিতীয় আদেশে সরকারি ব্যয় কমানোর নামে বিভিন্ন খাতের তহবিল সংকুচিত করে করপোরেট খাতে ব্যবসার সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। 

জানুয়ারির শেষের দিকে ট্রাম্প প্রশাসন অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটকে নির্দেশ দেয়। এতে সব সরকারি অনুদান ও ঋণ বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে স্কুলের খাবার কর্মসূচি, ফেডারেল স্টুডেন্ট লোনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাত অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে এটি আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে আটকে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অর্থ আসলে ট্রাম্পের স্টারগেট ইনিশিয়েটিভ নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রকল্পে ব্যয় করার পরিকল্পনা ছিল। 

আসলে বিলিয়নিয়ার ও বড় করপোরেশনগুলো ট্রাম্পের আনুগত্য স্বীকার করছে না। বরং তারা ট্রাম্পের প্রশাসনকে তাদের স্বার্থরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে তাঁরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারি নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে একদম মুক্ত পথে ব্যবসা চালাতে পারবেন। তাই বলা চলে, এই ধনী অভিজাত শ্রেণিই ট্রাম্পকে চালাচ্ছেন; ট্রাম্প তঁাদের চালাচ্ছেন না। 

ডোনাল্ড আর্ল কলিন্স ফিয়ার অব আ ‘ব্ল্যাক’ আমেরিকা: মাল্টিকালচারিজম অ্যান্ড দ্য আফ্রিকান আমেরিকান এক্সপেরিয়েন্স (২০০৪) বইয়ের লেখক

আল-জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে অনূদিত

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধনক ব র আম র ক র করছ ব যবস সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শব্দগুলো সাজাও, বাক্য বানাও

ইংরেজি: রি–অ্যারেঞ্জ

প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় ইংরেজি ৮ নম্বর প্রশ্নটি রি–অ্যারেঞ্জের ওপর। নম্বর থাকবে ৬।

# Rearrange words in the correct order to make meaningful sentences

Set-1

a. poetry/ time/ in/ my/ free/ father/ his/ writes.

b. I/ can/ questions/ ask/ some/ you?

c. us/ let/ for/ a/ go/ picnic.

d. should/ eat/ you/ chocolate/ not/ of/ lot/ a.

e. beautiful/ girl/ the/ how/ is!

Ans:

a. My father writes poetry in his free time.

b. Can I ask you some questions?

c. Let us go for a picnic.

d. You should not eat a lot of chocolate.

e. How beautiful the girl is!

আরও পড়ুনসবুজ উদ্ভিদ থেকে খাদ্যশৃঙ্খল শুরু১০ ডিসেম্বর ২০২৫

Set-2

a. hare/ for/ slept/ hour/ an/ the.

b. walk/ you/ can’t/ faster?

c. believe/ his/ hare/ the/ couldn’t/ eyes.

d. too/ for/ play/ don’t long.

e. steady/ race/ the/ wins/ slow/ but!

Ans:

a. The hare slept for an hour.

b. Can’t you walk faster?

c. The hare couldn’t believe his eyes.

d. Don’t play for too long.

e. Slow but steady wins the race!

Set-3

a. myself/ I/ introduce/ May?

b. club/ person/ the/ a/ there/ new/ is/ in/ today.

c. down/ please/ sit.

d. hour/ I/ you/ can/ in/ meet/ an.

e. Andy/ can/ when/ meet/ Tamal?

Ans:

a. May I introduce myself?

b. There is a new person in the club today.

c. Please sit down.

d. I can meet you in an hour.

e. When can Tamal meet Andy?

ইকবাল খান, প্রভাষক
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ