বাংলাদেশের অর্থনীতি রপ্তানিমুখী ছিল না। উৎপাদকেরা রপ্তানি বাজারের বিষয়ে যতটা আগ্রহী ছিলেন, তার চেয়ে বেশি আগ্রহ দেখাতেন দেশি বা স্থানীয় বাজারের বিষয়ে। তার কারণ হলো, পণ্য রপ্তানি করতে হলে অনেক নিয়মকানুন মানতে হয়। দেশের বাজারে পণ্য বিক্রি করতে এত নিয়মকানুনের বালাই নেই।

বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের শিল্প ও বিনিয়োগ নীতি বলতে কিছু নেই। বিচ্ছিন্ন বা ছাড়া ছাড়াভাবে কিছু নিয়মকানুন আছে, কিন্তু এগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই। অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ সমন্বয়হীনতা কাটাতে হবে। প্রণোদনাকাঠামোও এমন করতে হবে যেন রপ্তানি উৎসাহিত হয়।

আজ সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘রিকমেন্ডেশনস বাই দ্য টাস্কফোর্স অন রিস্ট্র্যাটেজাইজিং দ্য ইকোনমি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এক সম্মেলনের প্রথম দিনে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টাস্কফোর্সের সভাপতি কে এ এস মুরশিদ। তিনি টাস্কফোর্সের সুপারিশ নিয়ে আলোকপাত করেন। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও টাস্কফোর্স যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির সমস্যা কী, সে বিষয়ে আমরা সবাই কমবেশি অবগত। অনেক দিন ধরেই এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি নিজে অন্তত এক হাজার অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন বলে জানান। বলেন, কেন সমস্যার সমাধান হয় না বা কোথায় গিয়ে সব আটকে যায়, তার ব্যাখ্যা দরকার। টাস্কফোর্সের কাছে তাঁর প্রত্যাশা ছিল, সংস্কার কেন আটকে যায়, তার ব্যাখ্যা থাকবে।

বিশ্ববাণিজ্যে বহুপক্ষীয় বা বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রেহমান সোবহান। তিনি মনে করেন, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থা বা চুক্তি করতে হবে।

দেশের অর্থনীতির সমস্যা কী, সে বিষয়ে আমরা সবাই কমবেশি অবগত। অনেক দিন ধরেই এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কেন সমস্যার সমাধান হয় না বা কোথায় গিয়ে সব আটকে যায়, তার ব্যাখ্যা দরকার।—রেহমান সোবহান, চেয়ারম্যান, সিপিডি

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গত সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। ওই সময় বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, একসময় যেভাবে তৈরি পোশাকশিল্পের বিকাশ হয়েছিল, এখন সেভাবে তা হবে না। সে জন্য তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য ও রপ্তানি সম্প্রসারণে জোর দেন।

অনুষ্ঠানে টাস্কফোর্সের সুপারিশ নিয়ে উপস্থাপনা দেন টাস্কফোর্সের দুই সদস্য গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান ও র‍্যাপিডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক। তাঁরা রপ্তানি খাতের সম্প্রসারণে যথাযথ নীতি প্রণয়নে জোর দেন। তাঁরা বলেন, দেশের তৈরি পোশাক খাতের পাশাপাশি অন্যান্য খাতেরও বিকাশের সুযোগ আছে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের পরিমাণ অতটা বেশি নয়। এক তৈরি পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি হয়, কিন্তু চামড়াসহ কিছু খাতের রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও শেষমেশ রপ্তানি কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ে না। বস্তুত, বাংলাদেশের সমপরিমাণ জনসংখ্যা আছে এমন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। দেশের রপ্তানি আয়ের ৭৩ শতাংশ এলডিসি সুবিধা সংশ্লিষ্ট। ফলে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বড় ধাক্কা আসতে পারে। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জিএসপি প্লাস পেলেও আমরা তৈরি পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাব না। সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এমনকি দেশের রপ্তানি-জিডিপির অনুপাত গত ১২ বছরে কমেছে। ২০১২ সালে রপ্তানি-জিডিপির অনুপাত ছিল ২০ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে নেমে এসেছে ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশে। এর মূল কারণ হলো, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী–উদ্যোক্তারা রপ্তানি করার ঝক্কি নিতে চান না। অভ্যন্তরীণ বাজারে নানা সুরক্ষা থাকায় তাঁদের পক্ষে দেশের বাজারে ব্যবসা করাই অনেক সহজ। সে ক্ষেত্রে মানের বালাই নেই; শ্রম অধিকার রক্ষার বালাই নেই। এমনকি দেশে যে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসছে, তা থেকে উৎপাদিত পণ্য দেশের বাজারেই বেশি বিক্রি হচ্ছে, রপ্তানি হচ্ছে না।

সেলিম রায়হান বলেন, রপ্তানি খাত হিসেবে তৈরি পোশাকশিল্পেরও সম্প্রসারণের সুযোগ আছে। দেশে যে পোশাক তৈরি হয়, তা মূলত তুলাভিত্তিক। যদিও বিদেশে কৃত্রিম সুতাভিত্তিক পোশাকের বাজার আছে। একই সঙ্গে তৈরি পোশাক খাতকে যে ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, অন্যান্য খাতেও তা দেওয়া হোক। দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে রপ্তানিবিমুখতা আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, এ বিমুখতা দূর করতে শুল্কনীতির সঙ্গে অন্যান্য নীতির সমন্বয় দরকার।

এ ছাড়া রপ্তানি খাতের সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) সহজীকরণে জোর দেন সেলিম রায়হান। বলেন, দেশে যে এফডিআই আসছে, তার ৭০ শতাংশই পুনর্বিনিয়োগ হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশ থেকে মুনাফা নিয়ে যাওয়া কঠিন। সে জন্য তিনি মুনাফা নিয়ে যাওয়া সহজ করার কথা বলেন। এফডিআই আনা সহজ করতে ওয়ান–স্টপ সার্ভিস উন্নত করার পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, বর্তমানে এর হাল হলো, সবকিছু সেখানে স্টপ (বন্ধ) হয়ে যায়।

এদিকে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে টাস্কফোর্স গত ৩০ জানুয়ারি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তা এখনো হাতে পাননি বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

ক্ষমতায় এলে কথা ঠিক থাকবে?

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বাণিজ্য উদারীকরণের উদাত্ত আহ্বান জানান। বলেন, বাংলাদেশে যে সুরক্ষাবাদী বাণিজ্যিক পরিবেশ বিরাজ করছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতি পদে পদে বাধা। ফলে তিনি মনে করেন, নিয়মকানুনের ফাঁস শিথিল করতে দেশে বড় ধরনের উদ্যোগ দরকার।

এ পরিপ্রেক্ষিতে রেহমান সোবহান আমীর খসরুকে জিজ্ঞাসা করেন, পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে বা বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাঁর এসব কথার কতটা বাস্তবায়িত হবে। একই সঙ্গে তাঁর যেসব খাতে ব্যবসা আছে, সেগুলোয় বাজার উদারীকরণ হবে কি না। জবাবে আমীর খসরু জানান, এ ক্ষেত্রে তাঁর আপত্তি নেই। বাজারে প্রতিযোগিতা আসুক, সেটাই তিনি চান।

বিশ্ববাণিজ্যের উদারীকরণ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। বলেন, ‘প্রথম জমানায় ট্রাম্প চীনের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এবার আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিরোধ নিষ্পত্তি ইউনিট অকার্যকর করে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফলে পৃথিবীটা আদর্শ জায়গা নয়, সবখানেই কমবেশি একই পরিস্থিতি চলছে। এই বাস্তবতা মোকাবিলা করে আমাদের এগোতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউনিলিভারের চেয়ারম্যান ও এমডি জাভেদ আখতার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন পর স থ ত সমস য ব যবস দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক

নিরাপত্তার অজুহাতে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ককে। আটক থাকার এক পর্যায়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন। ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে যাঁর যাঁর ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও আবু বাকের মজুমদারকে ছয় দিন; সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পাঁচ দিন এবং নুসরাত তাবাসসুমকে চার দিন ডিবি কার্যালয়ে তখন আটক রাখা হয়েছিল। এই ছয় সমন্বয়কের মধ্যে নাহিদ এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সারজিস, হাসনাত ও নুসরাত এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আবু বাকের এখন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক।

ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার সেই ঘটনা সম্পর্কে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার বোনের বাসার লোকেশন (ঠিকানা) দিয়েছিলাম ডিবিকে। ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) ডিবি তাদের তত্ত্বাবধানেই আমাদের ছয়জনকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বোনের বাসায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর আমি প্রথমে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকনগরের একটা জায়গায় দেখা করি। আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। কীভাবে এক দফার (সরকার পতনের) ঘোষণায় যাওয়া যায়, সে বিষয়েও সেদিন আমরা চিন্তা করি।’

সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয় রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কিছু জায়গায় শিক্ষক ও আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।

প্রতিবাদ, বিক্ষোভ

সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগে পৃথক সমাবেশ-মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়। পাশাপাশি সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।

‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যা’র প্রতিবাদে ১ আগস্ট বেলা ১১টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল শিল্পী ও কলাকুশলীদের। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে তাঁরা প্রথমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ–সংলগ্ন ইন্দিরা রোডের প্রান্তে সমবেত হন। সেদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা ব্যানার-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।

পরে শিল্পীরা ইন্দিরা রোড দিয়ে শোভাযাত্রা করে ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের কাছে সমবেত হন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা সেখানে সড়কের পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীরা ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।

দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ থেকে সেদিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণগ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশ থেকে আরও জানানো হয়, শিল্পীরা তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।

সেদিন বিকেলে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মানববন্ধনে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গুলি করে শিশুসহ নির্বিচার মানুষ হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে করতে হবে।

সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) বলেন, হত্যার বিচার করতে হবে। হুকুমদাতাদেরও বিচার করতে হবে।

কূটনীতিকদের ‘ব্রিফ’

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ১ আগস্ট বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। সেই ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকেরা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ