চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) আবাসিক হলে মাদক সেবনের অভিযোগে চার শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের আবাসিক হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যসচিব ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। অপর একজন যন্ত্রকৌশল বিভাগের। তাঁরা শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের একটি কক্ষে প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টরা অভিযান চালান। এ সময় চার শিক্ষার্থী ও দুই ক্যানটিন বয়কে কক্ষটিতে সন্দেহজনক অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে ওই কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে ২০ গ্রাম গাঁজা ও ৫০০ মিলিলিটার মদ পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে দুই ক্যানটিন বয় বলেন, তাঁরা শিক্ষার্থীদের এসব মাদক সরবরাহ করেছেন। শিক্ষার্থীদের কললিস্টেও ক্যানটিন বয়দের সঙ্গে ফোনালাপের সত্যতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া এক ক্যানটিন বয়ের মুঠোফোনে চার শিক্ষার্থীর একটি কক্ষে বসে মদ পানের ভিডিও পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষার্থীদের মাদক সেবন ও মাদক রাখার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন হল প্রভোস্ট। জব্দ হওয়া আলামত ও লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত সোমবার শৃঙ্খলা কমিটির ২৮৩তম জরুরি সভায় ওই চার শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ নীতিমালার বিধি অনুযায়ী আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা ওই শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে আগামী ১১ মার্চের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপপরিচালক মো.

সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছে। যেকোনো উপায়ে মাদক নির্মূলে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সর্বনিম্ন শাস্তি হিসেবে চার শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ