বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা শাখার সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আলীর বাড়িতে  ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে জামায়াত ও বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এলংগীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে হামলা ও লুটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জামায়াত ও বিএনপি নেতারা। তারা আলী ও তাঁর বাবা আবদুস সামাদ পাখির বিরুদ্ধে কুমারখালীতে চাঁদাবাজি ও পুলিশ ব্যবহার করে আসামি বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন। কুমারখালী পৌর শিশুপার্ক-এলংগী সড়কের ধারে সমন্বয় আলীর বাড়িতে গতকাল পুলিশের নিরাপত্তা টহল দেখা গেছে। ‘কুমারখালী সর্বদলীয় ঐক্যজোট’ ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনটি হয়।   

মোবাইল ফোনে সমন্বয়ক আলী বলেন, বাবার সঙ্গে জামায়াত-বিএনপির রাজনৈতিক বিরোধ আছে। সেই সূত্র ধরে তারা আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এ সময় তিনি পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করার কথা জানান। অন্যদিকে নিজেকে পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দাবি করে আলীর বাবা পাখি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কিছু নেতা ফ্যাসিবাদের দোসরদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমার বাড়িতে পুলিশের সামনেই হামলা চালিয়েছেন। 

পৌরসভার এলংগী এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা জামায়াতের আমির আফতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লুৎফর রহমান, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন, যুবদলের আহ্বায়ক জাকারিয়া আনছার মিলন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খান আতিকুর রহমান সবুজ প্রমুখ। 

লিখিত বক্তব্যে জামায়াত নেতা আফজাল হোসাইন বলেন, আলী ও তাঁর বাবা চাঁদাবাজির পাশাপাশি গড়াই নদীর বালুরঘাট দখল, পুলিশ দিয়ে নিরীহ মানুষ ধরিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছেন। সমন্বয়কের পদ থেকে আলীকে বাদ দেওয়া ও চাঁদাবাজ পাখিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। 

আসামি বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুমারখালী থানার ওসি সোলায়মান শেখ। আলীর বাবা পাখির বিরুদ্ধে কুমারখালী, ঢাকাসহ বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা রয়েছে– এটা সত্য। কুমারখালী থানার মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম ব এনপ র আল র ব উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ