নিয়োগ-পদোন্নতিতে অনিয়ম: খুবির ১৩ কর্মকর্তা দুদকের জালে
Published: 27th, February 2025 GMT
নিয়োগ এবং পদোন্নতিতে অনিয়মসহ নানা অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই উপাচার্যসহ ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এর মধ্যে প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এবং প্রফেসর মো. ফায়েকুজ্জামান আওয়ামী লীগের আমলে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন।
ইতোমধ্যে তদন্ত অনুসন্ধানের জন্য চার সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে দুদক। আগামী ৫ মার্চের মধ্যে সকল তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে খুবি প্রশাসনকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনা দুদকের উপ-পরিচালক এবং অনুসন্ধান টিমের টিম লিডার মো.
সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এবং তিনি আওয়ামী লীগের আমলে ২০১২ সালের ১ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এবং পরে ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বাগেরহাটের বাসিন্দা। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। তিনি ২০২১ সালের ২৫ মে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত ২০ আগস্ট পদত্যাগ করেন।
খুলনার দুদক সূত্র জানায়, খুবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এবং সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামানসহ ১৩ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন নথি চেয়ে বর্তমান উপাচার্যের নিকট বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) চিঠি দিয়েছে খুলনা দুদকের উপ-পরিচালক এবং অনুসন্ধান টিমের টিম লিডার মো. আবদুল ওয়াদুদ।
সাবেক এই দুই উপচার্যের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত, পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের তালিকা, নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের তালিকা, নিয়োগ কমিটির সভার কার্যবিবরণীসহ নিয়োগ ও পদোন্নতির নথির সত্যায়িক ছায়ালিপি অনুসন্ধান করা হবে। পাশাপাশি সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের আমলে নিষ্পত্তিকৃত বিভাগীয় মামলার তথ্যদি ও রেকর্ডপত্র, ইউজিসি এবং মন্ত্রণালয় কর্তৃক যে সকল অডিট সম্পন্ন হয়েছে তার প্রতিবেদন এবং উক্ত সময়ের কোন অডিট আপত্তি থাকলে অডিট আপত্তি এবং তার জবাবও তদন্ত করা হবে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে যোগদান সংক্রান্ত আবেদনপত্র, নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র, পদোন্নতির আদেশ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র চেয়ে ১৩ জন কর্মকর্তার তথ্য অনুসন্ধান করা হবে।
এরা হলেন পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মো. মুজিবুর রহমান, আইআইএসএসসিই’র প্রিন্সিপাল সায়েন্টিক অফিসার সঞ্জয় সাহা, পরিবহন পুলের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহ নওরোজ, এস্টেট শাখার উপ-রেজিস্ট্রার কৃষ্ণপদ দাস, উপ-প্রধান প্রকৌশলী সামিউল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম মনিরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের ইন্সট্রুমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নাজমুল হাসিব, পরিবহন পুলের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মঈনুল ইসলাম, সংস্থাপন-৩ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার এস এম হুমায়ুন কবির, লিগ্যাল সেলের উপ-রেজিস্ট্রার হাওলাদার আলমগীর হাদী, মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র নার্স শ্যামলী সুলতানা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণে সিস্টেম এনালিস্ট আসিফ রুবায়েত হোসেন, বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. রুবেল আনসার।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, “ইতিমধ্যে দুদক থেকে আমাদের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে দুইজন সাবেক উপাচার্যসহ ১৩ জনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। আগামী ৫ মার্চের মধ্যে তথ্য দিতে বলা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) ওয়ালিউল হাসনাত নামের একজন অধ্যাপকের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছিল। সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানকে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত করলেও বিষয়টির চূড়ান্ত কোন সুরাহা হয়নি।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত র আমল তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের যুদ্ধক্ষমতা সীমিত করতে চান মার্কিন সিনেটর
এক মার্কিন ডেমোক্র্যাট সিনেটর আজ সোমবার একটি আইন প্রস্তাব করেছেন, যাতে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে না পারেন। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাত বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
ভার্জিনিয়ার সিনেটর টিম কেইন দীর্ঘদিন ধরেই হোয়াইট হাউসের কাছ থেকে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা আবার কংগ্রেসের হাতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে আসছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে, ২০২০ সালে, সিনেটর কেইন ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় ট্রাম্পের ক্ষমতা সীমিত করার জন্য একই ধরনের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। সেই প্রস্তাব সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ—উভয় কক্ষেই পাস হয় এবং কিছু রিপাবলিকান সদস্যের সমর্থনও পেয়েছিল।
তবে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভেটো ঠেকানোর মতো প্রয়োজনীয় ভোট পাওয়া যায়নি বলে সেটি কার্যকর হয়নি।
আরও পড়ুনআরও ৩৬টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন১৯ ঘণ্টা আগেকেইন বলেছেন, তাঁর সর্বশেষ যুদ্ধক্ষমতাসম্পর্কিত প্রস্তাবটি এ বিষয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী যুদ্ধ ঘোষণা করার একমাত্র ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে, প্রেসিডেন্টের হাতে নয়। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে যেকোনো ধরনের শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অবশ্যই যুদ্ধ ঘোষণা বা সামরিক শক্তি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট অনুমোদন থাকতে হবে।
এক বিবৃতিতে সিনেটর কেইন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করা উপযুক্ত নয়, যদি না সেই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য একেবারেই অপরিহার্য হয়ে ওঠে। আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকটি অনন্তকাল চলা সংঘাতে জড়িয়ে ফেলতে পারে।’
মার্কিন আইনে যুদ্ধক্ষমতাসংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো ‘প্রিভিলেজড’ হিসেবে বিবেচিত হয়, অর্থাৎ সিনেট বাধ্য থাকবে বিষয়টি দ্রুত আলোচনায় আনতে এবং ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে।
গত শুক্রবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ইরানে হামলা চালায়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করে দেওয়া। অপর দিকে, ইরান, যাদের দাবি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে, তারা ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে এর জবাব দেয়।
উভয় দেশই তাদের হামলা অব্যাহত রেখেছে। ফলে বেসামরিক নাগরিকেরা নিহত ও আহত হচ্ছেন। এতে কানাডায় চলমান বিশ্বনেতাদের বৈঠকে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে যে এই দুই পুরোনো শত্রুর মধ্যে চলমান সবচেয়ে বড় লড়াই বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে।
ট্রাম্প একদিকে ইসরায়েলের হামলাকে প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে ইরানের সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এ হামলায় অংশ নিয়েছে। তবে তিনি তেহরানকে সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধের পরিধি বাড়ানো উচিত হবে না।
গতকাল রোববার কানাডায় সম্মেলনের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি পরিস্থিতি শান্ত করতে কী করছেন? তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আশা করি একটা সমঝোতা হবে। আমার মনে হয় এখন সমঝোতার সময় এসেছে। তবে কখনো কখনো ওদের নিজের মধ্যে লড়ে নিতে হয়।’
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে ‘নো কিংস’ ব্যানারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ১৫ জুন ২০২৫