হবিগঞ্জে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে গুলির অভিযোগে করা মামলায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ। এ দিন দুপুরে ভাঙ্গা থানা থেকে তাকে সাদা পোশাকে ডিবির একটি টিম গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জ সদর থানায় হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম আওয়াল বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ২৬। এ মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম মুরাদ আলী, হবিগঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান, পরিদর্শক বদিউজ্জামান, হবিগঞ্জ সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব, গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো.
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৯ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিএনপির ওই নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হয় এবং হামলা চালায়। পাশাপাশি তারা গুলিবর্ষণ করতে থাকলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় অবস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছের বাসায় আক্রমণ করে গুলি ছুড়তে থাকেন। তাঁরা বাসার একটি কক্ষের জানালা ভেঙে সেখানে অবস্থানরত পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম আওয়ালকে গুলি করেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটে এবং পরে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে নাম গোপন রাখার শর্তে ভাঙ্গা থানা সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানা নেই। তবে আজ থানায় আসার পর জানতে পারি দুপুরের দিকে ভাঙ্গা থানার ওসি স্যারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভাঙ্গা সার্কেল স্যারও অবগত ছিলেন না, এর বেশি কিছু জানা নেই তাদের।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের মেট্রোপলিটন থানা থেকে বদলি হয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন শফিকুল ইসলাম।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
চট্টগ্রামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ৬টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।