পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা-কর্মচারী অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

বুধবার (৫ মার্চ) বিএসইসি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে পাঠানো মুঠোবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, ‘‘বিগত দিনের পুঁজিবাজার এর বিভিন্ন অনিয়ম অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ১২টি লিস্টেড কোম্পানি এর বিভিন্ন অনিয়ম তদন্ত করে। এ পর্যন্ত তদন্ত কমিটি ৭টি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া চলমান, যার আওতায় রয়েছে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বিএসইসি এর কিছু কর্মকর্তা।’’

বার্তায় বর্ণনা করা হয়, ‘‘এ ছাড়া বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ বছর চাকরি সমাপ্ত করায় বিধি মোতাবেক কমিশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাইফুর রহমানকে গত ৪ মার্চ অবসর প্রদান করা হয়। এই ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা বিএসইসির চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের কমিশনের বোর্ড রুমে চলমান সভায় জোরপূর্বক ঢুকে অবরুদ্ধ করে। তারা কমিশন মূল ফটকে তালা দিয়া দেয়, সিসি ক্যামেরা অফ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অরাজক, ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে ও পেশীশক্তি প্রদর্শন করে। একইসঙ্গে তারা চেয়ারম্যানের সদ্য যোগ দেওয়া পিএস, যিনি সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব, তাকে লাঞ্ছিত করে।’’

সেখানে আরো জানানো হয়, ‘‘তারা দাবি করে উপরে উল্লিখিত দুইটি ইস্যুতে নেওয়া সিদ্ধান্ত তৎক্ষণাৎ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কমিশনের তৎক্ষণাৎ পদত্যাগ করতে হবে। এর চরম উচ্ছৃঙ্খল ভীতিকর পরিস্থিতি ৪ ঘণ্টা চলে। কমিশন অবরুদ্ধ থাকার খবরে এবং বিএসইসি একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠান (সিআইআই) হওয়ায় প্রথমে পুলিশ ও পরবর্তীতে সেনাবাহিনী বিএসইসিতে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় বিএসইসির কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এরূপ অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।’’

জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের ফ্লোর (পঞ্চম তালা) ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিএসইসি ভবনের সামনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিএসইসির ভেতরে ঢুকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিএসইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অনেক বাগবিতণ্ডা এবং উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এক পর্যায়ে সাড়ে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থা থাকার পর চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার ফারজানা লালারুখ ও মো.

আলী আকবর নিজ গাড়িতে করে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় কমিশন ত্যাগ করেন।

ঢাকা/এনটি/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস র পর স থ ত অন য ম তদন ত অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
  • ২২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেবে বিএসইসি
  • পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
  • বিএসইসির তদন্তের মুখে ভ্যানগার্ড ও ক্যাপিটেক অ্যাসেট
  • দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে পুঁজিবাজার ও বন্ডকে ব্যবহারের প্রস্তাব