থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ পুরো কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে একাট্টা সংস্থার সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করছেন।

কমিশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঘিরে বুধবার নজিরবিহীন বিক্ষোভ ও চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবির পর গতকাল থেকে পুরোপুরি অচলাবস্থা বিরাজ করছে এ সংস্থার কার্যক্রমে। 

অবশ্য দেশের দুই শেয়ার বাজার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সকাল ১০টায় স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হয় এবং এখনও চলছে। 

এ রিপোর্ট লেখার সময় বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কমিশন কার্যালয় পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কমিশনের কোনো বিভাগের কোনো কাজ চলছে না। কার্যালয়ের বাইরে ও ভিতরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যদের উপস্থিত লক্ষ্য করা গেছে। 

কর্মকর্তারা জানান, দুপুর ১টা পর্যন্ত সংস্থার চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা কমিশন কার্যালয়ে আসেননি। অপর এক সূত্রে জানা গেছে, অদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার জন্য তারা সচিবালয় অবস্থান করছেন তারা।

এদিকে দুপুর পৌনে ১টায় সংস্থার মাল্টিপারপাস হলে জড়ো হয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীরা পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য বৈঠক করছেন। তারা সকলে লাল ব্যাচ ধারণ করে আছেন।

কয়েকজন কর্মকর্তা সকলকে জানান, চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদসহ কমিশনারদের কারোরই বিএসইসির মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থা পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক দক্ষতা ও যোগ্যতা নেই।

তাদের অভিযোগ, বর্তমান চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা সিকিউরিটিজ আইনকানুন বোঝেন না। আইনের বাইরে গিয়ে যথেচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। কমিশনের জুনিয়র থেকে সিনিয়র সর্ব পর্যায়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তাদের একই মত। 

অবশ্য কমিশনের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিগত কমিশনের সময়কার নানা শেয়ার কারসাজি ও অনিয়মের বিষয়ে তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কমিশনের কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনার কার্যক্রম শুরু করার কারণে কতিপয় কর্মকর্তা উশৃঙ্খল আচরণ ও অচলাবস্থা সৃষ্টি করছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এসইস কর মকর ত করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি

শেয়ার সূচকের নিয়মিত পতনের মূল কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সঙ্গে যেসব শেয়ারের অস্বাভাবিক বিক্রির চাপ দেখা যাচ্ছে, বাজার তদারকির মাধ্যমে সেসব শেয়ার চিহ্নিত করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

দেশের পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক নিম্নমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গতকাল মঙ্গলবার এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে তাৎক্ষণিক কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী  আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব দেলোয়ার হোসেন, পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের প্রতিনিধি ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।

সভার সিদ্ধান্ত হয়, বিনিয়োগকারীদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় টক শো ও বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিআইসিএম ও বিএএসএম পুঁজিবাজার-বিষয়ক শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করবে। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পুঁজিবাজার সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা প্রচার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা হবে।

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানির শেয়ার অফলোড করা, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা এবং টেক্সটাইল ও ওষুধ খাতের দেশী লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা হবে।

যেসব কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করার জন্য আকর্ষণীয় করছাড় দেওয়া হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সুযোগ সীমিত করা এবং পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্রধান উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে দেশের আর্থিক খাতের অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিনিয়োগকারীদের জন্য করছাড়ের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। এর মধ্যে লভ্যাংশ আয়ের ওপর করছাড় এবং পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের ওপর বিশেষ করছাড়ের সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে করসুবিধা দেবে সরকার
  • বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা চেয়ারম্যানের
  • কর্মীদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানালেন রাশেদ মাকসুদ
  • ২১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে বিএসইসির আদেশ জারি
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করল বিএসইসি
  • পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেবে বিএসইসি
  • বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে: বিএসইসি
  • বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে
  • পুঁজিবাজারে আস্থা বাড়াতে ৬ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ
  • এপ্রিলজুড়ে দর পতন, আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ নেই