লালমনিরহাটের ভুট্টাক্ষেতে পড়ে থাকা মাথাবিহীন নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে। হতভাগ্য ওই নারীর নাম হাসিনা বেগম (৪৫)। তিনি আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের চর কুঠিরপাড় গ্রামের ভ্যানচালক আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ভাড়ালদা এলাকার একটি ভুট্টাক্ষেতে মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের পর ঘটনায় জড়িতদের সন্ধানে নামে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি বিশেষ টিম দূর্গাপুর ইউনিয়নের কুঠিরপাড় এলাকায় ভ্যানচালক আশরাফুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে রক্তমাখা জ্যাকেট ও একটি বড় দা উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীর স্বামী আশরাফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, আশরাফুল ইসলাম দুটি বিয়ে করেছেন। পার্শ্ববর্তী দীঘলটারী গ্রামের কাশেম আলীর মেয়ে হাসিনা বেগম তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। এই সংসারে তাঁদের তিন মেয়ে রয়েছে। হাসিনা বেগমেরও একাধিক বিয়ে হয়েছে বলে জানান তারা। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে হাসিনা বেগম ও আশরাফুল বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে তারা আর ফিরে আসেননি।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নূরনবী বলেন, হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। এখন পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মরদ হ আশর ফ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।