এনসিপি থেকে পদত্যাগ করে গণ অধিকারে ফিরে গেলেন এক নেতা
Published: 6th, March 2025 GMT
সদ্য আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দিয়েছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। এনসিপির আত্মপ্রকাশের এক সপ্তাহের মাথায় ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে নতুন দল থেকে পদত্যাগ কর গণ অধিকার পরিষদের আগের পদে ফিরে গেছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার ইফতারের পর এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তরে সংযুক্ত) সালেহ উদ্দিন সিফাতের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন আবু হানিফ। বিষয়টি নিশ্চিত করে সিফাত প্রথম আলোকে বলেছেন, পদত্যাগের জন্য আবু হানিফ ব্যক্তিগত কারণের কথা বলেছেন। তাঁর পদত্যাগপত্রটি বিবেচনাধীন আছে।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে আবু হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগ করে আমি গণ অধিকার পরিষদে স্বপদে (উচ্চতর পরিষদের সদস্য) ফিরেছি।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি। এই দলে নুরুল হকের দলের অন্তত ২০ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা যোগ দেন। তাঁরা নতুন দলের বিভিন্ন পদে আসীন হয়েছেন। এ বিষয়ে গত বুধবার নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেছিলেন, এনসিপিতে যোগ দিতে তাঁর দলের অনেককে ১০ কোটি টাকা ও সংসদ সদস্য করার প্রস্তাব দিয়েছেন। নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কোনো কোনো উপদেষ্টার পক্ষ থেকেও এ ধরনের প্রলোভন দেখানো হয়েছে।
নুরুল হকের দাবি, আবু হানিফসহ তাঁর দলের উচ্চতর পরিষদের কয়েকজন সদস্যকে এভাবে বিভ্রান্ত ও ‘ব্ল্যাকমেল’ করে এনসিপিতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁরা ভুল বুঝতে পেরে গণ অধিকার পরিষদে ফিরে এসেছেন।
নুরুলের এ দাবির বিষয়ে আবু হানিফ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনসিপি বেটার কিছু হবে মনে করে আমি এই দলে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, গণ অধিকার পরিষদে থেকেই ভালো কাজ করতে পারব। তাই আমি গণ অধিকারে ফিরে যাচ্ছি। শিগগিরই আমি এনসিপি থেকে পদত্যাগ করব।’
অবশ্য এনসিপিতে যোগ দেওয়ার জন্য ১০ কোটি টাকা ও সংসদ সদস্য করার প্রস্তাবের বিষয়টি অস্বীকার করেন হানিফ।
হানিফ আজ পদত্যাগ করলেও গণ অধিকার পরিষদ থেকে এনসিপিতে যোগ দেওয়া অন্য কেউ পদত্যাগ করেননি। এনসিপির দপ্তরে সংযুক্ত যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আবু হানিফ ছাড়া আর কেউ পদত্যাগপত্র জমা দেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক এনস প ত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ