মারুফা মিতু, পেশায় শিক্ষক আর নেশায় একজন আর্টিস্ট। প্রকৃতির রং, রূপ, সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলেন পোশাকের জমিনে। মিতুর অনলাইন উদ্যোগ ‘রানী কুটির’-এর হ্যান্ডপেইন্ট বা হাতে আঁকা নকশার পোশাক সারা দেশের ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে গেছে। বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে হাতে আঁকা নকশার জন্য। দেশের নন্দিত সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা রানী কুটিরের নিয়মিত গ্রাহক বলে জানান মারুফা মিতু। এ ছাড়া দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের প্রবাসী বাঙালিরা অনলাইনে অর্ডার করে সংগ্রহ করে থাকেন রানী কুটিরের পোশাক। 

মারুফা মিতুর রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন তার ঈদের কালেকশন সম্পর্কে। তিনি বলেন, ‘এবার ঈদ কালেকশনে হাতে আঁকা শাড়ী,পাঞ্জাবি, বেবী ড্রেস ও কুর্তি পিস থাকছে। ক্লায়েন্টদের পছন্দকেই প্রাধান্য দিয়ে আমি কাজ করছি। ক্লায়েন্ট দের ফরমায়েশিতে পিওর মসলিন, রাজশাহী সফট সিল্ক ও সেমি মসলিন শাড়ীতে পেইন্টিং করা হয়েছে। পাঞ্জাবির কাপড় হিসেবে খাদি ও বেক্সিভয়েল কাপড়টাকে বেছে নিয়েছি। কারণ এই কাপড়গুলো পরতে আরামদায়ক। হাতে আঁকা বেবীড্রেসগুলো খাদি কাপড় ও বেক্সিভয়েল কাপড়ে করা হয়। কুর্তিপিস গুলো খাদি, বেক্সিভয়েল ও মসলিনে করা হয়েছে।’

আরো পড়ুন:

শত বছর আগে আঁকা ছবির মতো মেয়েটি

বেসনের সঙ্গে যে যে উপাদান মিশিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে পারেন

উৎসব আর আবহাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে মারুফা মিতু বেছে নিয়েছেন কাপড়ের ধরণ আর রং। তবে এই ঈদের পোশাকগুলোতে তিনি মোটিফগুলো নতুনভাবে এঁকেছেন। কাজে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছেন। ‘রানী কুটির’ অনলাইন পেইজের মাধ্যমে ক্লায়েন্টরা দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অর্ডার করে পছন্দসই পোশাক সংগ্রহ করতে পারেন। অর্ডার কনফার্ম হওয়ার পর, ক্লায়েন্ট দের ঠিকানা অনুযায়ী হাতে আঁকা পোশাকগুলো পার্সেল করে পাঠিয়ে দেন মারুফা মিতু। 

মিতু বলেন, ‘‘পেইন্টিং পোশাক গুলো বিভিন্ন প্রাইসের হয়ে থাকে। দামটা নির্ধারণ করা হয় ফেব্রিকস ও পেইন্টিং এর ওপর। যেমন- যে পেইন্টিং এ সময় বেশি লাগে, সেই পেইন্টিং এর প্রাইস একটু বেশি হয়। মোট কথা হলো কাজের ওপর প্রাইস ডিপেন্ড করে।’’

সম্ভাব্য দরদাম: হ্যান্ডপেইন্টিং শাড়ির দাম ৪,০০০ থেকে ১২,০০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাঞ্জাবির দাম পরে ১৬৫০ থেকে ১৯০০ টাকা। আর বেবী ড্রেসগুলোর দাম নির্ধারণ হয় ফেব্রিক ও নকশা অনুযায়ী।

রাইজিংবিডি জানতে চেয়েছিল ঈদের দিন কেমন পোশাক পরবেন এই ডিজাইনার। তিনি বললেন, ‘‘ঈদের দিন আমি আমার নিজের ডিজাইন করা হ্যান্ডপেইন্ট শাড়ি পরবো।’’ 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইন ট

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ