কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে গত বছর নিজেদের ভার্চ্যুয়াল সহকারী ‘সিরি’র নতুন সংস্করণ বাজারে আনার পরিকল্পনা করেছিল অ্যাপল। সংস্করণটি চালু হলে সিরির বুদ্ধিমত্তা ও স্বয়ংক্রিয়তার পরিধি আরও বিস্তৃত হতো। এর ফলে আইফোন ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন অ্যাপের সঙ্গেই ভার্চ্যুয়াল সহকারীর বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু সিরির নতুন সংস্করণের উন্নয়নকাজ শেষ করতে না পারায় ২০২৬ সালের আগে এটি চালু করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে অ্যাপল।

সিরির বিষয়ে অ্যাপলের মুখপাত্র জ্যাকলিন রয় বলেন, ‘নতুন ফিচারগুলো বাস্তবায়ন করতে আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় লাগছে। আশা করছি, আগামী বছর এগুলো পর্যায়ক্রমে উন্মোচন করা সম্ভব হবে।’ এর আগে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি অ্যাপল জানিয়েছিল, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সে আরও উন্নত ফিচার যুক্ত করা হবে, যার মধ্যে সিরির নতুন সংস্করণও থাকবে।

আরও পড়ুননতুন আইফোনের ঘোষণা দিল অ্যাপল, দাম কত২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সিরির হালনাগাদ সংস্করণ উন্মুক্তের সময় পেছানো অ্যাপলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতায় অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলো একের পর এক নতুন প্রযুক্তিসেবা উন্মোচন করছে।

চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, সম্প্রতি উন্মুক্ত করা জিপিটি ৪.

৫ এআই মডেলটি এখন পর্যন্ত ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী এআই মডেল। অন্যদিকে অ্যামাজনও তাদের সহকারী অ্যালেক্সার নতুন সংস্করণ উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছে। যদিও সেটি এখনো বাজারে আসেনি। গুগলও তাদের এআই সহকারী জেমিনি আরও উন্নত করতে কাজ করছে। এর ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারে বেশ পিছিয়ে পড়বেন আইফোন ব্যবহারকারীরা।

আরও পড়ুনআইফোনের ব্যাটারির স্থায়িত্ব দ্বিগুণ করতে অ্যাপলের ৩ পরামর্শ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

গত বছরের অক্টোবর মাসে আইফোন, আইপ্যাড ও ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স উন্মুক্ত করেছে অ্যাপল। ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন কাজগুলোকে মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে সমন্বয় করতে সক্ষম অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারকারীদের কাজের ধরন আগে থেকেই বুঝতে পারে।

সূত্র: নিউজ ১৮

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব দ ধ মত ত ব যবহ র আইফ ন সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ