রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় পাঁচ মামলার আসামি গোলাম মোস্তফাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে সহযোগীরা। গতকাল বুধবার মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে গোলাম মোস্তফার কর্মচারী ও স্থানীয় সহযোগীরা তাঁকে ছিনিয়ে নেয়। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে লালমাটিয়ার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে মোহাম্মদপুর থানার একটি দল আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে যায়। তাঁকে গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পরানোর সময় আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়।

গোলাম মোস্তফা নানকের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত। জুলাই আন্দোলনের সময় নানককে ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় পাঁচটি মামলা রয়েছে।

ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান বলেন, পুলিশ লালমাটিয়া এলাকায় মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে যায়। এ সময় তাঁর কয়েকজন কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন মানবঢাল তৈরি করে তাঁকে গ্রেপ্তারে বাধা দেয়। পুলিশ আসামিকে নিয়ে আসতে চাইলে বাধা দেয় এবং পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় বাকিদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি দল একাধিক মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। কিন্তু সেখানে কিছু লোক আগে থেকেই থাকায় গ্রেপ্তার করতে বাধা দেয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত আওয় ম ল গ ম হ ম মদপ র থ ন গ র প ত র করত গ র প ত র কর সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ