গাজীপুরে তিন কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায়, ভাঙচুর
Published: 13th, March 2025 GMT
গাজীপুরে তিন পোশাক কারখানায় গতকাল বুধবার শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। দুটি ঘটনায় দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। অন্যটির ক্ষেত্রে দাবি না মানায় ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার বাঘের বাজারে শ্রমিক জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না গতকাল ভোরে ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্ট লিমিটেডের শ্রমিকরা সকাল ৮টায় সড়কে অবস্থান নেন। প্রায় চার ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
শ্রমিকরা জানান, শ্রমিক জান্নাতুলের সন্তান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে সহকারী উৎপাদন ব্যবস্থাপক (এপিএম) মতিউর রহমানের কাছে এক দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না দিয়ে পরিচয়পত্র রেখে বাসায় চলে যেতে বলেন এপিএম। ভোরে কারখানায় আসার পথে মহাসড়ক পার হতে গিয়ে জান্নাতুলের মৃত্যু হয়।
নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দাবি মেনে নেওয়া হলে দুপুর ১২টার দিকে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এর পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকের গ্লোবসের শ্রমিকরা তৃতীয় দিনের মতো গতকাল সকালে বিক্ষোভ করেন। শ্রমিক নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়াসহ কয়েকটি দাবি জানান। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শ্রমিকরা মৌচাক-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কে গিয়ে আবার বিক্ষোভ করে। আশপাশের কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নেন।
পুলিশ ও শ্রমিকরা জানান, গত শনিবার গ্লোবস ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিক আশরাফুল ইসলামের গায়ে হাত তোলেন লাইনম্যান জহিরুল ইসলাম। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা জহিরুলসহ দুই কর্মকর্তাকে পিটিয়ে আহত করে। অন্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণ করে। সেই বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গত দু’দিন ধরে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার সকালে কারখানা বন্ধের একটি নোটিশ টাঙিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়, শ্রম আইনের ১৬ ধারা অনুযায়ী বুধবার থেকে গ্লোবস কারখানা লে অফ (বন্ধ) ঘোষণা করা হচ্ছে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বারতোপা গ্রামের খান টেক্স ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা প্রায় ৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও ঈদ বোনাস দেওয়ার দাবিতে গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তারা মাওনার সলিংমোড়ে একত্রিত হয়। মাওনা-কালিয়াকৈর সড়কে অবস্থান নেয়। দুপুর দেড়টার দিকে কর্তৃপক্ষ দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে সড়ক ছাড়ে শ্রমিকরা।
কারখানার ব্যবস্থাপক মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবস থ ন ন কর মকর ত গতক ল অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’
ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী।
গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”
আরো পড়ুন:
কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি
কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”
কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”
ঢাকা/শান্ত