চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) প্রস্তাবিত নীতিমালার খসড়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একইসঙ্গে সমাবর্তনের পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জোরালো দাবি ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি চাকসু নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে চবি প্রশাসন। সভায় ১০ দিনের মধ্যে চাকসুর নীতিমালার খসড়া পেশ করে শিক্ষার্থীদের থেকে পুনরায় মতামত নেওয়ার কথা জানানো হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের ১৪ দিন পার হলেও তা পেশ করা হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.

মো. কামাল উদ্দিন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “চাকসু নিয়ে সে সভায় আমরা শিক্ষার্থীদের থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মতামত পেয়েছিলাম। তিনদিনের মধ্যে তাদের প্রস্তাবনাগুলো লিখিতভাবে পাঠানোর কথা বলি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০ দিনের মধ্যে একটি ড্রাফট (খসড়া) পেশ করার কথাও ছিল। তবে এটির ইংরেজি অনুবাদসহ আরো জরুরি কিছু কারণে যথাসময়ে প্রকাশ করতে পারিনি। আমরা এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি।”

আরো পড়ুন:

জাদুঘরে রূপান্তর হবে চবির ‘ভূতুড়ে’ ভবন

ভর্তির ৭ মাসেও পরিচয়পত্র পাননি চবি শিক্ষার্থীরা

তিনি বলেন, “নীতিমালার খসড়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন। ঈদের পর শিক্ষার্থীদের কাছে এটি পেশ করা হবে। তখন তাদের মতামত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে।”

নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে উপ-উপাচার্য বলেন, “আপাতত আমরা সমাবর্তন নিয়ে ভাবছি। সমাবর্তনের পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

এদিকে, দীর্ঘ ৯ বছর পর আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চবির পঞ্চম সমাবর্তন। ২০১১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা এ সমাবর্তনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। আগামী ১৫ মার্চ থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরুর সম্ভাব্য সময় জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প শ কর ন র পর মত মত

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ