নাটোরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার সাংবাদিক আব্দুর রশিদকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংড়া আমলি আদালতের দায়িত্বরত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান এ আদেশ দেন।

আবদুর রশিদ দৈনিক সমকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি। জেলার সাংবাদিকদের অভিযোগ, তথ্য চাওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতিবাদে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার শতাধিক সাংবাদিক।

আরও পড়ুননাটোরে তথ্য চাওয়ার জেরে সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ৫ ঘণ্টা আগে

আদালত সূত্রে জানা যায়, বেলা একটার দিকে আব্দুর রশিদকে নাটোরের সিংড়া আমলি আদালতে হাজির করে সিংড়া থানা-পুলিশ। এর আগে তাঁকে ২০১৮ সালের ঘটনায় ২০২৪ সালে দায়ের করা মারপিট ও চাঁদাবাজির একটি মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে এক হাজার টাকা জামানতে পুলিশের প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।

এদিকে বেলা ১১টা থেকে জেলার সাত উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরাও। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাঁরা একটি মিছিল নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে যান। সমাবেশে বক্তব্য দেন নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজি আহমেদ, সম্পাদক নাজমুল হাসান, ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসিম উদ্দিন, সম্পাদক কামাল হোসেন ও ইউনিক প্রেসক্লাবের সম্পাদক বুলবুল আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নবীউর রহমান, মঞ্জুরুল হাসান, হালিম খান, আল মামুন, মাহবুব হোসেন প্রমুখ।

আরও পড়ুননাটোরে সাংবাদিকদের ওপর বরখাস্ত এসপির চড়াও হওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ১২ মার্চ ২০২৫

বক্তারা বলেন, যে ঘটনার সঙ্গে সাংবাদিক আব্দুর রশিদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, সেই ঘটনায় করা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাঁকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতি ঢাকতে প্রশাসনের ইন্ধনে পুলিশ এই গ্রেপ্তার নাটক সাজিয়েছে। তাঁরা অবিলম্বে সিংড়ার ইউএনও, ওসি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার প্রত্যাহার দাবি করেন। তা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুননাটোরে আদালতে ছবি তোলায় সাংবাদিকের ওপর হামলা বরখাস্ত পুলিশ সুপারের১১ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে

সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।

জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’

ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।

১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজারে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের হুমকি পর্যটকের
  • স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
  • নবাগত সদর ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়
  • বাগমারায় স্নাতকের শিক্ষার্থীকে ‘চিকিৎসক’ বানিয়ে চোখের অস্ত্রোপচারের চেষ্টা, বাবা-ছেলের দণ্ড