নাটোরে গ্রেপ্তার সাংবাদিকের জামিন, ইউএনও ও ওসির প্রত্যাহার দাবি
Published: 13th, March 2025 GMT
নাটোরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার সাংবাদিক আব্দুর রশিদকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংড়া আমলি আদালতের দায়িত্বরত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান এ আদেশ দেন।
আবদুর রশিদ দৈনিক সমকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি। জেলার সাংবাদিকদের অভিযোগ, তথ্য চাওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার জেরে আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতিবাদে আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার শতাধিক সাংবাদিক।
আরও পড়ুননাটোরে তথ্য চাওয়ার জেরে সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ৫ ঘণ্টা আগেআদালত সূত্রে জানা যায়, বেলা একটার দিকে আব্দুর রশিদকে নাটোরের সিংড়া আমলি আদালতে হাজির করে সিংড়া থানা-পুলিশ। এর আগে তাঁকে ২০১৮ সালের ঘটনায় ২০২৪ সালে দায়ের করা মারপিট ও চাঁদাবাজির একটি মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে এক হাজার টাকা জামানতে পুলিশের প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে বেলা ১১টা থেকে জেলার সাত উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরাও। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাঁরা একটি মিছিল নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে যান। সমাবেশে বক্তব্য দেন নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজি আহমেদ, সম্পাদক নাজমুল হাসান, ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসিম উদ্দিন, সম্পাদক কামাল হোসেন ও ইউনিক প্রেসক্লাবের সম্পাদক বুলবুল আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নবীউর রহমান, মঞ্জুরুল হাসান, হালিম খান, আল মামুন, মাহবুব হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুননাটোরে সাংবাদিকদের ওপর বরখাস্ত এসপির চড়াও হওয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ১২ মার্চ ২০২৫বক্তারা বলেন, যে ঘটনার সঙ্গে সাংবাদিক আব্দুর রশিদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, সেই ঘটনায় করা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাঁকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতি ঢাকতে প্রশাসনের ইন্ধনে পুলিশ এই গ্রেপ্তার নাটক সাজিয়েছে। তাঁরা অবিলম্বে সিংড়ার ইউএনও, ওসি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার প্রত্যাহার দাবি করেন। তা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
আরও পড়ুননাটোরে আদালতে ছবি তোলায় সাংবাদিকের ওপর হামলা বরখাস্ত পুলিশ সুপারের১১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে