রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলার মুখে দেশটির সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলের সুদঝা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ বাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার এমন দাবি করেছে মস্কো। গত বছরের আগস্টে হঠাৎ হামলা চালিয়ে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল ইউক্রেন।

তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধের আগে সুজঝা শহরে প্রায় ৫ হাজার মানুষের বসবাস ছিল। যুদ্ধ চলাকালে ইউক্রেনের দখল করা রাশিয়ার ভূখণ্ডের সবচেয়ে বড় শহর ছিল সুদঝা। এখন এই শহরের নিয়ন্ত্রণ হারানোর মধ্য দিয়ে সীমান্তে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ ঝুঁকির মধ্যে পড়ল।

আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় সুদঝাসহ আরও দুটি এলাকা ‘স্বাধীন’ করেছে তারা। কুরস্কের মালায়া লোকনিয়া গ্রামে রুশ বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতির ছবিও প্রকাশ করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে রাশিয়ার এ দাবির পর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেন।

এর আগে গতকাল বুধবার কুরস্ক অঞ্চল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তখন তাঁকে সামরিক বাহিনীর পোশাকে দেখা যায়। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ থাকা এলাকাগুলো ‘স্বাধীন করবে’ রুশ বাহিনী।

গত এক বছর ধরেই অস্ত্র ও সেনা সদস্যদের ঘাটতির কারণে যুদ্ধক্ষেত্রে পিছু হটছে ইউক্রেন। সম্প্রতি ইউক্রেন বাহিনীকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ এবং নিরাপত্তা সহায়তা স্থগিতের পর কুরস্ক অঞ্চলেও মস্কোর অগ্রগতি বৃদ্ধি পায়। এরপরই আজ শহরটি পুনরায় দখলের ঘোষণা দিল তারা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ