ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবারও গ্রাহকদের জন্য আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক অফার নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা নগদ। 

দেশের শীর্ষস্থানীয় নির্দিষ্ট লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডগুলোতে নগদের মাধ্যমে পেমেন্ট করলেই গ্রাহকরা দুই দফায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতে পারেন। এছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ ঈদের আনন্দ বাড়াতে প্রতিবছরের মতো সাড়া জাগানো কিছু উপহারের ঘোষণা চমক হিসেবে নিয়ে আসছে। 

নগদ যাত্রা শুরু করার অল্প দিনের মধ্যেই দেশের অন্যতম গ্রাহকপ্রিয় প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠার পেছনে বড় কারণ— তারা সব সময়ই গ্রাহকের আনন্দ-উৎসবে পাশে থাকতে চেয়েছে। এ বছর গ্রাহকদের ঈদ আনন্দ আরো বেশি রঙিন করে তুলতে চায় নগদ। সেজন্যই দেশের শীর্ষ ৪৯টি জামা-জুতোসহ নির্দিষ্ট লাইফস্টাইল প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটা করে ক্যাশব্যাক পাওয়ার সুযোগ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। 

নগদের এই ঈদ উপহারের ক্যাম্পেইন বিষয়ে চিফ মার্কেটিং অফিসার সাদাত আদনান আহমেদ বলেছেন, “নগদ সব সময় তার গ্রাহকদের একটি পরিবারের অংশ বলে মনে করে। তাই, সবচেয়ে বড় উৎসবে গ্রাহকদের সময়টা রঙিন করতে এই ক্যাশব্যাক অফার নিয়ে এসেছি আমরা। আশা করি, মার্চেন্ট পেমেন্ট করে গ্রাহকরা এই ক্যাশব্যাক পাওয়ায় তাদের ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ততা আরো বাড়বে।”

নগদে পেমেন্ট করে ক্যাশব্যাক পাওয়ার এই সুযোগ থাকছে ৪১টি অ্যাপারেল ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট আউটলেটে। এসবের মধ্যে আছে—প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠান অঞ্জন‘স, আর্টিজান আউটফিটার্স লিমিটেড, জেন্টল পার্ক, ইনফিনিটি, লুবনান, রিচম্যান, কে ক্রাফট, ক্যাটস আই, গ্রামীণ চেক, টুয়েলভ ক্লথিংয়ের মতো দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও আটটি ফুটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের সব আউটলেটে এই ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে নগদ পেমেন্ট করে। এসবের মধ্যে আছে—অ্যাপেক্স, বে, ওরিয়ন, ক্রিসেন্ট, ভাইব্রেন্টের মতো শীর্ষ ব্র্যান্ড। 

এসব প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট আউটলেটে ন্যূনতম ২ হাজার টাকার কেনাকাটা করলে এই ক্যাশব্যাক তাৎক্ষণিক উপভোগ করতে পারবেন গ্রাহকরা। নগদ অ্যাপ বা ইউএসএসডি থেকে এ পেমেন্ট করা যাবে। তবে, এপেক্স ও এসএসবি লেদারে অ্যাপ বা ইউএসএসডির পাশাপাশি নগদ ই-কম গেটওয়ে ব্যবহার করেও ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে। 

একজন গ্রাহক প্রতি লেনদেনে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা ক্যাশব্যাক পাবেন। পুরো ক্যাম্পেইন চলা অবস্থায় দুই বারে মোট ৩০০ টাকা ক্যাশব্যাক পাবেন ক্যাম্পেইনের শর্ত অনুযায়ী। 

গত ৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাশব্যাক অফার ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে। কোনো গ্রাহকের নগদ অ্যাকাউন্ট স্থগিত থাকলে তিনি এই অফারের যোগ্য হবেন না।

ঢাকা/রফিক  

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ম ন ট কর গ র হকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের বাণিজ্যনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর হোয়াইট হাউসের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই এ আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।  

ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করছে এবং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাম্প যখন বিশ্বের বহু দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই ভারতকে উদ্দেশ করে তাঁর এমন কঠোর অবস্থান সামনে উঠে আসে।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

‘ভারতের শুল্ক বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ’, গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের বক্তব্য ‘লক্ষ্য করেছে’ এবং এর ‘প্রভাব মূল্যায়ন’ করবে।

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যবিরোধ: পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে

আজ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধার্য করা ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ঘোষিত সম্ভাব্য শুল্ক থেকে মাত্র ১ শতাংশ কম।

এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে  চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ শুল্ক ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আরও জটিল করে তুলতে পারে। একাধিক দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া অনেক কোম্পানির নতুন গন্তব্য হয়েছে দেশটি। মে মাসে অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য আইফোন এখন ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে; যাতে উচ্চ শুল্ক এড়ানো যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ওটিআর) তথ্যমতে, গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন (১২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য।

ট্রাম্প কেন ভারতকে নিশানা করছেন

সম্প্রতি ট্রাম্প একাধিকবার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভারতের ‘অতি উচ্চ’ শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যও রয়েছে।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘বছরের পর বছর আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অত্যন্ত বেশি।’

এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে ভারত কিছু পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করেছে।

ওটিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পণ্যবাণিজ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ঘাটতি দেখেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তুলনামূলকভাবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রায় ২৯৫ বিলিয়ন (২৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্যঘাটতিতে ছিল।

আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।

‘এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা’, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ট্রাম্প।

ভারতের প্রতিক্রিয়া

এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত সরকার ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু, তবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ভারতের ওপর ধার্য করা শুল্কহার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম।

বুধবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’

আগস্টের শেষ দিকে দুই দেশের মধ্যে আরেক দফা বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩০ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা১৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ