জাসাসে কোন ধরণের ধান্দাবাজ, চাঁদাবাজদের জায়গা হবে না: সানি
Published: 14th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) নারায়ণগঞ্জ সদর থানা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) ১৩ রমজান সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) কেন্দ্রী কমিটি যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল ইসলাম সানি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটি যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল ইসলাম সানি বলেন, আমি যেহেতুক জাসাসে দায়িত্বে রয়েছি তাই জাসাস এর কথা বলব। জাসাসে কোন ধরণের চাঁদাবাজ, ধান্দাবাজদের জায়গা কখনো হয়নি আর হবেও না।
এই গোগনগর ও আলীরটেক ইউনিয়নে অনেক লোক রয়েছে যাদের কোন পদ-পদবী না থাকার কারনে রাগ- অভিমান করে ঘরে বসে রয়েছেন। গোগনগরের সাথে আমার একটা সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৯১ সালে কমান্ডার সিরাজ সাহেবকে নিয়ে এই গোগনগরে নির্বাচনে থেকে সব সময় আপনাদের পাশে ছিলাম।
কখনো কমান্ডার সিরাজ কখনও এড.
তিনি আরোও বলেন, জাসাসের অনেকেই ছিল আজ তারা নেই। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আজকে যে সমস্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা রয়েছে তাদের বাড়ির দাড়োয়ান, কাজের বুয়ারাও পদ-পদবী পায়। আসলে ত্যাগী নেতাকর্মীরা সুযোগ পায় না। যেহেতু জাসাসে সুযোগ রয়েছে।
আমি জাসাসের নেতা-কর্মীদেরকে বলব আপনারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের রাগ ভাঙ্গাবেন। যদি আপনারা না পারেন আমাকে বলবেন আমি জাসাসের পতাকা তলে নিয়ে আসব এবং তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করবো।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিকেরা হারিয়ে যেতে পারেনা। তবে এও লক্ষ্য রাখবেন অন্য কোন দলের লোক যেন অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং কোন চাঁদাবাজ, ধান্দাবাজদের জায়গা জাসাসে দিব না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাসাস সভাপতি মোঃ স্বপন চৌধুরী বলেন, আমরা জাসাস সংগঠনের সাথে জড়িত জানবেন যারাআমরা প্রত্যেকেই সৌভাগ্যবান। আমরা এ কারনে সৌভাগ্যবান যে বিএনপির নয়টি সহযোগী সংগঠনের মধ্যে আমাদের সংগঠনের স্থান চতুর্থ।
আমরা এজন্য সৌভাগ্যবান কারন, জাসাস এর যিনি কর্ণধার তিনি সারা বাংলাদেশের মধ্যে তিন জনের মধ্য একজন। তিনি হলেন আমাদের আনিসুল ইসলাম সানি ভাই। আমাদের এ সৌভাগ্যটাকে কাজে লাগিয়ে সানি ভাইয়ের হাতকে আরোও শক্তিশালী করতে হবে।
স্বপন চৌধুরী আরো বলেন, আজকে স্টেজে বসা এড. সরকার হুমায়ন কবীর ভাইয়ের কাছ থেকে আমি ছাত্রদলের রাজনীতিতে হাতেখড়ি নিয়ে চলে গেলাম যুবদলে। এরপর ১৯৮৭ সালের শেষের দিকে সানির ভাইয়ের ছাতার নিচে এসে জাসাসের রাজনীতি শুরু করি।
জাসাস করে আমি অর্থ ছাড়া অনেক কিছুই পেয়েছি। কারন আমার নেতাইতো কামায় না। আমার নেতা চিন্তা করে জনগণ, সমাজ ও দেশের জন্য। আমি সানি ভাইয়ের কাছ থেকে শিখেছি কিভাবে ক্লীন ইমেজ নিয়ে রাজনীতি করতে হয়। তাই জাসাস যারা করে তারা সবাই স্মার্ট।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা জাসাস এর সভাপতি কবীর শিকদার এর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ মাসুম এর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড.সরকার হুমায়ন কবীর, জেলা জাসাস সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ,সেক্রেটারী মাহবুব মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাধীন, সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম সরদার, গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আক্তার হোসেন, সেক্রেটারী জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়াজী, ডা. এম এ লতিফ, মুক্তার হোসেন, আলমগীর হোসেন রানা, এ কে এম আনোয়ার হোসেন সুমন, আবুল কাসেম, আলীরটেক ইউনিয়ন জাসাস সভাপতি দিদার হোসেন, ইয়ার হোসেন মোল্লা আকরাম হোসেন সাগর প্রমুখ।
এছাড়াও আয়োজকদের মধ্যে অভ্যর্থনায় ছিলেন, গোগনগর ইউনিয়ন জাসাস সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ সিকদার, জামান সরদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোতালিব ও আক্তার হোসেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ল ইসল ম স গ গনগর ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।