যুক্তরাষ্ট্রে মেডিকেল ডিগ্রি অর্জন দেশের অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। তবে খরচ, জটিল ভর্তিপ্রক্রিয়া এবং বিভিন্ন শর্তের কারণে অনেকের পক্ষে সেই স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই স্বপ্ন যেন ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। শিক্ষার্থীদের জন্য এসব প্রতিবন্ধকতাকে তুলনামূলক সহজ করেছে আর্কঅ্যাঞ্জেল ইউনিভার্সিটি।

আমেরিকার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর যেখানে ৬০ থেকে ৭০ হাজার ডলার খরচ হয়, সেখানে আর্কঅ্যাঞ্জেল ইউনিভার্সিটিতে মেডিকেলে পড়তে বছরে মাত্র ১৫ হাজার ডলারই যথেষ্ট। এ ছাড়া সঙ্গে আরও থাকছে স্কলারশিপ হিসেবে প্রথম বছরে পাঁচ হাজার ডলার। সুতরাং মাত্র ১০ হাজার ডলার দিয়ে শিক্ষার্থীরা মেডিকেলে পড়া শুরু করতে পারছেন।

বিশ্বমানের মেডিকেল ডিগ্রি প্রদানের লক্ষ্যে ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আর্কঅ্যাঞ্জেল ইউনিভার্সিটি। এখানে রয়েছে ছয় বছর মেয়াদি শিক্ষাক্রমের সুবিধা। পড়াশোনার শেষের দুই বছর যুক্তরাষ্ট্রে ক্লিনিক্যাল রোটেশনের সুযোগ রয়েছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল লাইসেন্স পরীক্ষা বা ইউএসএমইলির প্রস্তুতিও নিশ্চিত করবে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বিশেষত্ব হলো, এটি উচ্চমানের শিক্ষা এবং গবেষণার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অ্যাডভান্সড ক্লিনিক্যাল ট্রেনিং সরবরাহ করে। যেখানে শিক্ষার্থীরা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল সিস্টেমের অংশ হতে পারবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ আন্তর্জাতিক চিকিৎসাব্যবস্থায় দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। এতে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বাজারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন খুব সহজেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা

আর্কঅ্যাঞ্জেল ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে বিভিন্ন উন্নত মানের ল্যাব। যেগুলো শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাদের রয়েছে তথ্যচালিত অন্তর্দৃষ্টিভিত্তিক শিক্ষাদান পদ্ধতি ‘স্মার্ট ট্রেনিং এআই স্টুডেন্ট সিস্টেম’, যা পাঠ্যক্রমের মান উন্নত রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। বিশ্ববিদ্যালয়টির এমআইভিএডি গবেষণা শাখা শুরু থেকেই চিকিৎসাক্ষেত্রে উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে, যা আন্তবিষয়ক প্রকল্প ও ক্লিনিক্যাল গবেষণার মান বাড়াতেও সাহায্য করে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি অ্যানাটোমেজ টেবিল ইন্টারেকটিভ থ্রি–ডি অ্যানাটমিক্যাল ভিজ্যুয়ালাইজেশন সুবিধা প্রদান করে। তাদের প্যাথলজি ল্যাবটি আধুনিক ডায়াগনস্টিক সরঞ্জাম এবং ইমেজিং প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত। ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিতে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ এবং উন্নত গবেষণার সুবিধা প্রদান করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

হাইটেক কম্পিউটার ফ্যাসিলিটিতে ডিজিটাল লার্নিং, সিমুলেশন এবং গবেষণা সমর্থন করার জন্য অত্যাধুনিক আইটি অবকাঠামো রয়েছে আর্কঅ্যাঞ্জেল ইউনিভার্সিটিতে, যা নিশ্চিত করে শিক্ষার্থী ও কর্মীদের আপডেটেড সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার রিসোর্স এবং ওয়াইফাই সংযোগের অ্যাকসেস। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির লাইব্রেরিতে চিকিৎসা–সাহিত্য, জার্নাল ও ডিজিটাল রিসোর্সের একটি বিস্তৃত সংগ্রহ রয়েছে, যা গবেষণা, অধ্যয়ন এবং শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে।

ক্যারিবিয়ান সাগরের নীল জলরাশির পাশে অ্যান্টিগুয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আর্কঅ্যাঞ্জেল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ