দেশ একটা বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, টিসিবির পণ্যের জন্য লম্বা লাইন দেখেই মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা কী, সেটা বোঝা যায়। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ঘরে ফিরছেন। অন্যদিকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে।

আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে গণমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জি এম কাদের এ কথা বলেন।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত। মনে হচ্ছে, দেশ একটা বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সামনের দিনগুলো কেমন হবে, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মানুষ আতঙ্কের মধ্যে বাস করছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, সামাজিক অস্থিরতার কারণে নতুন করে বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনমাফিক অর্থসহায়তা দিতে পারছে না। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বেকারত্ব ও ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবে এমন বাস্তবতায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসুক।’

এ সময় জাপার চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী ও দলের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি–বিষয়ক সম্পাদক এলাহান উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক পর স থ ত এম ক দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ