হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাটের বাড়ির উঠান লোকে লোকারণ্য। সংবাদমাধ্যম কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়। তা সামলে সোমবার সন্ধ্যায় ছেলে হামজা চৌধুরীকে নিয়ে সামনে আসেন মোর্শেদ দেওয়ান চৌধুরী। ১০ মিনিটের মতো সংবাদ সম্মেলনের বেশির ভাগ সময়ই কথা বলতে হয়েছে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা হামজাকে। ছেলের উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসা দেখে পাশে বসা বাবা মোর্শেদ দেওয়ান চৌধুরীর চোখ চল চল করছিল। আবেগে চোখের কোনে পানিও চলে আসে তাঁর। ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ছেলে হামজা চৌধুরী লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াবেন।
স্বপ্নপূরণের উচ্ছাটা একটু বেশিই কাজ করছে মোর্শেদ দেওয়ান চৌধুরীর মধ্যে, ‘অবশ্যই স্বপ্নপূরণ হয়েছে। আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল হামজা যদি একদিন বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারে। আমি তো তাকে সেভাবে বলতে পারিনি। বাংলাদেশের মানুষ যে তাকে ভালোবাসে আমি সেগুলো তাকে দেখিয়েছি। সেও বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসে। এক পর্যায়ে তার বাংলাদেশের হয়ে খেলার ইচ্ছা জাগল। সেই ইচ্ছা থেকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর তার আশা পূরণ হয়েছে। আশা করছি, বাংলাদেশের হয়ে সে ভালো কিছু করতে পারবে। আর ২৫ তারিখের খেলায় আশা করি বাংলাদেশ জিতবে।’
হামজার আগমন সামনে রেখে বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছিলেন তাঁর বাবা মোর্শেদ। পুরো বাড়ি নতুন করে সাজিয়েছেন নিজের মতো করে। এত এত সংবাদমাধ্যম আর মানুষের উপস্থিতি দেখে নিজেদের গর্বিত মনে করছেন মোর্শেদ দেওয়ান, ‘আজ (সোমবার) আমার জন্য এটা অত্যন্ত গর্বের দিন। অনেক ভালো লাগা কাজ করছে। হামজা এই বাড়িতে এর আগে অনেকবার এসেছিল। তার স্ত্রী এই প্রথম এসেছে। সবাইকে পেয়ে আমার ভালো লাগছে।’
হামজার খেলা দেখতে পুরো পরিবার ভারতের শিলংয়ে যাবে। লাল-সবুজের জার্সিতে ছেলের প্রথম ম্যাচ খেলার সাক্ষী গ্যালারিতে বসেই হতে চান হামজার বাবা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”
আরো পড়ুন:
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর
ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার
তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”
বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”
তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল