ফতুল্লায় আটক ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনিয়ে নিলো সহযোগী মাদক ব্যবসায়ীরা
Published: 18th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে আটক ৪ আসামিকে হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছে সহযোগী মাদক ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার দুপুরে মাসদাইর এলাকার বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপরীত গলিতে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাহিদ, সুমনসহ ৪ জনকে আটক করে।
তবে কিছুক্ষণ পর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সেলিম ওরফে কসাই সেলিম, রাসেল ওরফে কসাই রাসেল, কাজল, রিয়াদ শাওন, সানি, হাসান সহ ১৫-২০ জনের মাদক কারবারিরা দেশীয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীরা হ্যান্ডকাফ পরিহিত আটককৃত চার মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনিয়ে নেয় এবং গাড়ি ভাংচুর করে। মাদক কারবারিদের হামলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কনেস্টেবল আহত হয়। হামলাকারীদের থেকে রক্ষা পেতে মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা এক শিক্ষকের বাড়ীতে আশ্রয় গ্রহন করে। সেখানে ও হামলাকারীরা হামলা চালায়।
ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার নির্দেশনায় সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো.
পুলিশ ও প্রশাসনের অভিযানে ২০ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ১,৭০০ পিস ইয়াবা, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল ফেনসিডিল, হেরোইনসহ চাপাতি, ছুরি, সুইস গিয়ার চাকুসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযানে কোনো আসামিকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
ফতুল্লা মডেল থানার মাসদাইর শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার সড়কের ভাড়াটিয়া মো. নাসিরের দুই পুত্র সেলিম ওরফে কসাই সেলিম, রাসেল ওরফে কসাই রাসেল দীর্ঘদিন ধরে বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপরীতে প্রকাশ্যে ফেন্সিডিল, হেরোইন, টাপেন্ডা, গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রি করে আসছে।
তার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে এবং আগেও একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ১০ আগস্ট, ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার নুর ভিলা নামক এক নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলা থেকে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২১ সালের ১৬ জুন, ফতুল্লার মাসদাইর গুদারাঘাটের পারুলির বাড়ির সামনে থেকে এক নারীসহ ২০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয় রাসেল।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস