নির্বাচনী আসন নির্ধারণ নিয়ে ভারতে রাজনৈতিক ঝড়
Published: 19th, March 2025 GMT
ভারত সরকার জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্বাচনী আসন পুনর্নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়ায় দেশটিতে এখন রাজনৈতিক ঝড় বইছে। মূলত উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রভাব নিয়ে রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর এই ঝড়ের প্রথম ঢেউ উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলে।
ওই বিতর্কে প্রথম মুখ খুলেছেন দক্ষিণাঞ্চলীয় তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। দক্ষিণের অন্য চারটি রাজ্য হলো– অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরালা ও তেলেঙ্গানা। স্ট্যালিন এই অঞ্চলে নরেন্দ্র মোদির বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতিক। তিনি বলছেন, ‘সীমানা নির্ধারণের পদক্ষেপ দক্ষিণ ভারতের ওপর ঝুলন্ত তলোয়ার।’ তিনি ২২ মার্চ বিভিন্ন রাজ্যপ্রধানদের নিয়ে সম্মেলনও ডেকেছেন।
বিবিসি বলছে, জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন নির্ধারণ হলে দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশগুলোতে আসন সংখ্যা কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, এই অঞ্চলের জনসংখ্যা উত্তরাঞ্চলের রাজ্যগুলোর চেয়ে অনেক কম। দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলো স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিক দিয়ে অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও এখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম।
ভারতের সংবিধানে বলা হয়েছে, প্রতিটি রাজ্যকে জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ করতে হবে। এর আগে জনশুমারি করার শর্ত রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের নেতাদের উদ্বেগ, জনশুমারিতে দক্ষিণের জনসংখ্যা কম হওয়ার কারণে রাজ্যগুলো সংসদীয় আসন হারাতে পারে।
ভারত ১৯৫১, ১৯৬১ ও ১৯৭১ সালে দশম বার্ষিক জনশুমারির ভিত্তিতে তিনবার সংসদীয় আসন পুনর্নির্ধারণ করেছে। কম জনসংখ্যার রাজ্যগুলোতে সংসদীয় আসন কমে যাওয়ার আশঙ্কায় গত ৫০ বছর পদ্ধতিটির প্রয়োগ বন্ধ রয়েছে। ২০২৬ সালে আবার তা শুরু হওয়ার কথা। মোদি সরকার সেটা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো ইয়ামিনী আইয়ার বলেন, এই বিতর্কে ভারত একটি ফেডারেল অচলাবস্থার দ্বারপ্রান্তে।
১৯৫১ সালে ভারতে প্রতিটি এমপি ৭ লাখ লোকের প্রতিনিধিত্ব করতেন। সেই সংখ্যা এখন ২৫ লাখে ঠেকেছে, যা মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের একজন সদস্যের জনসংখ্যার তিনগুণেরও বেশি। আর যুক্তরাজ্যের একজন এমপি প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার নাগরিকের প্রতিনিধিত্ব করেন।
স্ট্যালিন সতর্ক করে দিয়েছেন, ২০২৬ সালে সীমানা নির্ধারণ করা হলে তামিলনাড়ু আটটি আসন হারাতে পারে। তবে এই বিতর্কে বিজেপি খুব কমই কথা বলেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বস্ত করেছেন, আসন্ন সীমানা নির্ধারণে দক্ষিণ রাজ্যগুলো একটি আসনও হারাবে না। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুহাস পালশিকর সতর্ক করে বলেছেন, উত্তর-দক্ষিণ বিভাজন ভারতের ফেডারেল কাঠামোর জন্য হুমকিস্বরূপ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জনস খ য র র জনস খ য র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীদের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালনের সময় আমাদের ছয়জন বীর শান্তিরক্ষীর শাহাদাত বরণ এবং আরো আটজনের আহত হওয়ার সংবাদে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিপুল অবদান আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত; বীরদের এই আত্মত্যাগ একদিকে জাতির গৌরব, অন্যদিকে গভীর বেদনার।”
আরো পড়ুন:
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত: আইএসপিআর
ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার
তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আহত শান্তিরক্ষীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই দুঃসময়ে সরকার শান্তিরক্ষীদের পরিবারগুলোর পাশে থাকবে।”
বিবৃতিতে তিনি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ।”
তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা আরও জোরদারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
নিহত শান্তিরক্ষীদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল