বড় স্বপ্ন, হামজা জয়গানে বাংলাদেশের শিলং যাত্রা
Published: 20th, March 2025 GMT
বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিযোগিতা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিয়মিত খেলা একজন ফুটবলার প্রথমবার গায়ে জড়াতে যাচ্ছেন লাল-সবুজের বাংলাদেশের জার্সি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৫ মার্চ বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে নতুন জাগরণ শুরু হতে যাচ্ছে। যে পথে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, হামজা চৌধুরী।
ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশীপে (ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিভাগ) শেফিল্ডের হয়ে খেলছেন হামজা। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সিতে খেলতে এসেছেন। আগামী ২৫ মার্চ শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও ভারত। দুই দলের ফুটবল দ্বৈরথ নিয়ে গত কয়েক বছর এমনিতেই আলাদা রোমাঞ্চ, উত্তেজনা ছড়ায়। সেই পালে আরো হাওয়া লাগিয়েছেন হামজা।
তাকে ঘিরে সীমান্তের এপার-ওপারে চলছে তীব্র আলোচনা। বাংলাদেশের ফুটবল নতুন করে তার ব্র্যান্ডিংয়ে এগিয়ে যাবে এমনটাই বিশ্বাস সংশ্লিষ্টদের। সেই বিশ্বাস, ভারতকে তাদের মাটিতে হারানোর বড় স্বপ্ন এবং হামজা জয়গানে শিলং যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় উড়াল দিয়েছেন হামজা, জামাল, সাদরা। কলকাতা হয়ে গৌহাটিতে পৌঁছবেন তারা। সেখান থেকে শিলং।
ক্রীড়াঙ্গনের সব আলো হামজা কেড়ে নিয়েছেন। এখন কেবল লাইমলাইটে তিনি। প্রত্যাশার চাপটাও বেশি। তবে সেই প্রত্যাশার চাপ বাড়তি বোঝা হবে না এমনটাই বিশ্বাস সংশ্লিষ্টদের। হামজা নিজেও আছেন খোলামনে, ‘‘আমি তেমনি মনে করি না (বাড়তি চাপ) । দেখুন দিন শেষে আমরা ফুটবল খেলি। ফুটবলে যে কোনও কিছুই হতে পারে। এখানে কোচ দলকে প্রস্তুত করছে। আমি এখানে এসে সবার ভালোবাসা পাচ্ছি। আমি দলকে সহযোগিতা করতে চাই। এবং সেটা যতটা সম্ভব ততটা।”
গতকাল বসুন্ধরা কিংস অ্যারোনায় অনুশীলন করেছেন হামজা। বাংলাদেশের সতীর্থদের সঙ্গে সেটাই ছিল তার প্রথম সেশন। মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়াম। যেখানে গতকাল মালদ্বীপের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে স্বাগতিকরা। ৩-০ গোলে জয় পেয়েছে তারা। নয় মাস পর অবসর ভেঙে ফেরা সুনীল ছেত্রি গোল পেয়েছেন।
সেখানে বাংলাদেশ সৌদি আরবে প্রস্তুতি সেরেছে। অনুশীলন বাদে পৃথক তিন ক্লাবের সঙ্গে ম্যাচও খেলেছে। প্রস্তুতির ঘাটতি আছে কিনা সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে। উত্তরে নিজেদেরকে প্রস্তুত বলে দাবি করলেও, ভারত সফরের দল এখনো ঘোষণা করতে পারেননি তিনি।
শিলংয়ের বিমানে উঠলেও বাফুফে এখনও ২৩ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করতে পারেনি। ফলে গতকাল ফটোসেশনে অংশ নেওয়া ২৭ ফুটবলারকে নিয়েই ভারতের বিমান ধরেছে বাংলাদেশ। সঙ্গে আছে ১০ কোচিং স্টাফ।
ফুটবল নতুন করে জাগরণের স্বপ্নে বিভোর। হামজা পরশ পাথর হয়ে এসেছেন। তার ছোঁয়ায় পাল্টে যাবে এমনটাই বিশ্বাস সংশ্লিষ্টদের।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ডে বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না: আইএইএ
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজ বৃহস্পতিবার গৃহীত একটি প্রস্তাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগ ভবিষ্যতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপনের পথ খুলে দিতে পারে।
গত সপ্তাহে আইএইএ ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজকের সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল, ইরান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। তারা কিছু এলাকায় গোপনে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের আওতায় থাকা কিছু এলাকায় এমন কিছু পারমাণবিক উপকরণ রেখেছে, যার বিষয়ে তারা তথ্য দেয়নি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আইএইএর বৈঠকের আগে ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে প্রস্তাবটি সমর্থন না করার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এতে তাঁরা বড় ভুল করবেন এবং ইরান এর ‘জবাব’ দেবে।
আইএইএর প্রতিবেদন এবং গভর্নর বোর্ডের এমন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুননিরাপত্তাঝুঁকিতে ইরাকের দূতাবাস থেকে কর্মীদের আংশিকভাবে সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র১১ ঘণ্টা আগেতা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। এমন এক সময়ে আইএইএর গভর্নর বোর্ডে প্রস্তাবটি গৃহীত হলো, যার মাত্র এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের কিছু নাগরিককে মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের নাগরিকদের অঞ্চলটি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং তারা কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা অর্জনের চেষ্টা করবে না।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরান। এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নজরদারি করার জন্য এই চুক্তি করা হয়েছিল, যাতে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।
আরও পড়ুন‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান০৪ জুন ২০২৫চুক্তি করার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি থেকে একতরফা বের হয়ে যায়। তাঁর মতে, এই চুক্তি ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির পথ বন্ধে যথেষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে চুক্তিটি একধরনের বাতিল হয়ে যায়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে চুক্তিটি নবায়নের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু সফল হননি।
আইএইএর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা অস্ত্র তৈরির পর্যায়ের কাছাকাছি এবং প্রায় ৯টি পারমাণবিক বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। পরমাণু অস্ত্র নেই—এমন যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত নজিরবিহীন ঘটনা। ফেব্রুয়ারির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই মজুতের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ১৩৩ দশমিক ৮ কেজিতে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুনইরানের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজি, যা নজিরবিহীন: আইএইএ৩১ মে ২০২৫