শহীদের রক্তের দায় ক্ষমা করা যায় না: ইউনুস আহমাদ
Published: 21st, March 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেছেন, “শহীদের রক্তের দায় কোনো অবস্থাতেই ক্ষমা করা যায় না। রক্তের মূল্য বৃথা যায় না। কোনো রাজনীতি, কোনো অজুহাত বা কোনো কূটকৌশলে মানুষের রক্ত-জীবনকে বিক্রি করে দিলে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করে না।”
শুক্রবার (২১ মার্চ) জাতীয় শহীদ মিনারে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এক গণইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, “রক্তের দায় যারা অস্বীকার করে তাদের শাস্তি ভোগ করতেই হয়। তাই ২৪ এর গণআন্দোলনসহ বিগত বছরগুলোতে যারা হত্যা, গুম, জুলুম ও নিপিড়নের সাথে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের বিচার করতেই হবে। এবং আগামীতে যেনো কোন স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে সেজন্য রাষ্ট্র সংস্কার করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।”
আরো পড়ুন:
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে স্বাগত জানাল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
রাখাল রাহার বিচার করতে হবে: হেফাজতে ইসলাম
তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষা না কর্মমুখী, না নৈতিকতাভিত্তিক। ফলে এই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে জাতীকে নেতৃত্বে দেওয়ার মতো সৎ ও দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে না। তাই নৈতিকতাভিত্তিক কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।”
তারুণ্যের বেকারত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, “দেশে শিল্পায়ন করতে হবে। তারুণ্যকে সহজ ও সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। স্টার্টআপ প্রোগ্রামকে বাধাহীন উৎসাহ দিতে হবে।”
শাখা সভাপতি আরিয়ান মুহাম্মদ ইমনের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের হুসাইনের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাছির আহমাদ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনির হোসাইন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি নিয়ামাতুল্লাহ বিন হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ রাছিবুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।