আদালত যেন তাঁর কাজে বাধা না দেন: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
Published: 21st, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার তাঁর কাজে বাধা দেওয়া বন্ধ করতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে ভেনেজুয়েলার কয়েক শ নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে এল সালভাদরে পাঠানো নিয়ে আদালতের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ট্রাম্প প্রশাসন। এরই মধ্যে আদালত নিয়ে এই মন্তব্য করলেন ট্রাম্প। এতে করে দেশটি সাংবিধানিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারক জেমস বোসবার্গ কঠোর ভাষায় বলেছেন, ‘আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ট্রাম্প প্রশাসন কিছু ব্যক্তিকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে।’ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভেনেজুয়েলার ওই অভিবাসীদের কেন এল সালভাদের পাঠানো হয়েছে, আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে বিচার বিভাগের কাছ থেকে তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি।
যেসব ব্যক্তিকে বের করে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অনিয়মিত যুদ্ধ’ চালাচ্ছে। এই অভিযোগে গত শনিবার (১৫ মার্চ) ট্রেন ডি আরাগুয়ার গ্যাংয়ের ২৩৮ এবং আন্তর্জাতিক গ্যাং গোষ্ঠী এমএস-১৩ এর ২৩ সদস্যকে কারাগারে রাখতে এল সালভাদরের পাঠায় ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের কারাগারে রাখার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থ পাবে মধ্য আমেরিকার দেশটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রেন ডি আরাগুয়ার সদস্যদের দ্রুত দেশ থেকে বের করতে গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) কয়েক শতকের পুরোনো ভিনদেশি শত্রু আইন বা এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট ব্যবহারের নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি যুদ্ধকালীন আইন হিসেবে পরিচিত।
পরদিন শনিবার ওয়াশিংটনের কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারক জেমস বোসবার্গ ১৭৯৮ সালের ওই ভিনদেশি শত্রু আইনের ব্যবহার ১৪ দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তাঁর যুক্তি ছিল, এই আইনে অন্য দেশের দ্বারা সংঘটিত এমন ‘শত্রুতাপূর্ণ কর্মকাণ্ড’কে বোঝানো হয়েছে, যা ‘যুদ্ধের সমতুল্য’।
কিন্তু ওই দিনই অভিযুক্ত গ্যাং সদস্যদের কয়েকটি উড়োজাহাজে করে এল সালভাদরের পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাদের পাঠানো হয়েছে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের কেবল ট্যাটু বা উলকি থাকার অপরাধেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার জেমস বোসবার্গ বিচার বিভাগের আইনজীবীদের কাছে কিছু বিষয়ে তথ্য জানতে চান। তিনি তাঁদের প্রশ্ন করেন, গ্যাং সদস্যদের পাঠানো-সংক্রান্ত ট্রাম্পের ঘোষণাটি ঠিক কখন কার্যকর হয়েছিল এবং প্রত্যর্পণের ফ্লাইটগুলো এল সালভাদরের উদ্দেশ্যে কখন রওনা করেছিল?
জেমস বোসবার্গের প্রশ্নের জবাব দিয়ে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী (আইসিই) কর্মকর্তা রবার্ট সারনা স্থানীয় একটি আদালতকে জানান, শনিবার বিকেলে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে ট্রাম্পের নির্দেশ প্রকাশিত হওয়ার পর আটক ব্যক্তিদের বহনকারী তিনটি উড়োজাহাজ এল সালভাদরের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে।
তবে আটক ব্যক্তিদের বহনকারী একটি উড়োজাহাজ বোসবার্গের রুলিংয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে গিয়েছিল। শনিবার রাত ৭টা ২৫ মিনিটে বোসবার্গ দুই সপ্তাহের জন্য এসব গ্যাং সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কার স্থগিত রাখতে বলেছিলেন। আদালতকে আইসিই কর্মকর্তা রবার্ট সারনা আরও বলেন, আটক ব্যক্তিদের শুধু এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্টের অধীন পাঠানো হয়নি; বরং তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আলাদা বহিস্কারের নির্দেশ ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে, ২০ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র কর
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় বিকেলে বৈঠকে বসছে কমিটি
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ পর্যালোচনায় আজ সোমবার বিকেল ৪টায় বৈঠকে বসছে এ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আজ বিকেল ৪টায় মিটিংয়ে বসছি। সেখানে তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করব। আমরা সুপারিশগুলো উপদেষ্টা পরিষদে তুলব। সরকারি কর্মচারী ভাইদের বলব, সরকারি কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে। আমাদের সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ পুনরায় বিবেচনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। অবশ্যই এটা পুনরায় বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মচারীরা বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন এমন কিছু করা হবে না। এজন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
গত ৪ জুন এ অধ্যাদেশ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব।